আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে এই হুমকি দেন নার্সেরা।
‘প্রধানমন্ত্রীর সাত বছর পূর্বের ঘোষণা বাস্তবায়নসহ নার্স সমাজের বিরাজমান সমস্যা সমাধানে’ বাংলাদেশ নার্সেস ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে ইসমত আরা পারভীন বলেন, “মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন তাকে ধিক্কার জানাই, তার পদত্যাগ চাই।”
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “অনেক দিন বেকার নার্সেরা রাস্তায় বসে আছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল আসলে তোমরা কী চাও। তোমাদের আমি কী উপকার করতে পারি। তোমরা আসো আমাদের সঙ্গে আলোচনা করো।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “তাকে (স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে) ফোন দিলে তিনি ফোনটা ওয়াইফকে ধরিয়ে দেন। আমি আমার নার্সদের ব্যাপারে বারবার কথা বলেছি, উনি একবারও কর্ণপাত করেননি। উনি আছেন শুধু বদলি বাণিজ্য করার জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আমরা রাস্তায় আসতে বাধ্য হয়েছি। সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনার নার্সদের দপ্তরে যান, দেখতে পারবেন- আমলারা কিভাবে বদলি বাণিজ্য করছে।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে নার্স সংগঠনের এই নেতা বলেন, “নার্সদের জন্য প্রধানমন্ত্রী আছেন। নার্সরা প্রধানমন্ত্রীর বাসার সামনে গিয়ে বসবে। প্রধানমন্ত্রী তাদের এক অনুষ্ঠানে পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে আরও ১০ হাজার নার্স নিয়োগের ঘোষণা দেন। তার ঘোষণার পর দুই বছর অতিবাহিত হলেও আজও ঘোষণার বাস্তবায় হচ্ছে না। নার্সিংয়ে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, সব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মহাখালীতে নার্স ভবন করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।”
তিনি বলেন, “দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদার নার্সদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা দেয়ার কথা বললেও নার্সরা আজও প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা পায়নি। তিনি আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী নার্সদের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দ্রত তা বাস্তবায়ন করবেন।”
এই মানববন্ধন থেকে নার্সেরা নয় দফা দাবি তুলেছেন। একই সঙ্গে সামনে আরও দুই দিনের কর্মসূচি দিয়েছেন। কর্মসূচি হচ্ছে ২৪ এপ্রিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং ২৯ এপ্রিল মহাসমোবেশের মাধ্যমে বৃহত্তর ও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা।
তাদের নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ২৮ মার্চ পিএসসির দেয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পূর্বের মতো ব্যাচ, মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ বাস্তবায়ন। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ হাজার পদ সৃষ্টিসহ সব শূন্য পদে ৮৯ শতাংশ ডিপ্লোমা ও ১১ শতাংশ বেসিক বিএসসি থেকে নিয়োগ। তাদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা দেয়া ইত্যাদি।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নার্সেস ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের সভাপতি হাসনা বেগম, মহাসচিব জসিম উদ্দিন বাদশা, স্টাফ নার্সেস এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হোসেন মিলনসহ বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ বেসিক গ্রাজুয়েট নার্সেস সোসাইটির নেতারা।