জমজমাট নেশার আসর প্রচলিত আছে- ‘গ্রাম দেখলে কলম, আর বিল দেখলে চলন।’ দেশের সর্ববৃহৎ বিলাঞ্চল চলনবিলের ঐতিহ্যমণ্ডিত তিসিখালী মেলায় চলছে । মেলাকে কেন্দ্র করে মাজারের চারদিকে প্রায় শতাধিক নেশার আসর বসিয়ে প্রকাশ্যে গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করছে একশ্রেণির মাদকসেবী ও মাজারের ভক্তবৃন্দ। এলাকাবাসী এই কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, নাটোরের সিংড়া উপজেলা সদর হতে প্রায় ৮কি:মি: পূর্বে চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে দ্বীপের মতো জনমানবশূন্য স্থানটি তিসখালী মাজার বলে পরিচিত। স্থানটি এই অঞ্চলে ঐতিহ্যমণ্ডিত ও গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছে সাধক, দরবেশ হজরত ঘাসি দেওয়ান (রহ.)-এর মাজার শরিফ হওয়ার কারণে। প্রায় চারশ বছর আগে এই সাধু পুরুষ এই স্থানটিতে তিরোধিত হন। ভক্তরা সেখানে মাজার গড়ে তোলেন। আর এই মাজারকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই চৈত্র মাসের অষ্টম তিথিতে বসে মেলা। মেলাকে ঘিরে আশপাশের প্রায় শতাধিক গ্রামজুড়ে আত্মীয়-স্বজন ও জামাইদের আগমন উৎসবে পরিণত হয়।
রাতভর ভক্তদের অংশগ্রহণে বাউল গানসহ বিভিন্ন গানের আসর বসে। চোখ-মন ছুঁয়ে যায় সবুজের সমারোহে। বকসহ অসংখ্য অতিথি পাখির ওড়াউড়ি, দূরের গ্রাম, জল-মাটি-মানুষসহ আরও কত কী!
তবে মেলাকে কেন্দ্র করে রাতভর চলে নেশার আসর। আর বৈশাখী মেলার পাশাপাশি নেশার আসরে যুবসমাজ নিঃস্ব ও বিপদগামী হচ্ছে।
মাজারের ভক্ত ইউসুফ আলী বলেন, এই সময় গাঁজা সেবন না করলে তাদের বাবার প্রতি কোন ঝোক আসে না। তাই আসর বসিয়ে তারা কয়েকজন গাঁজা সেবন করছে।
কুষ্টিয়ার আল্লার দরগা থেকে আগত রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি প্রতি বছরই অসংখ্য ভক্তদের নিয়ে এই মেলায় আসেন। তবে মাজারের চারদিকে নেশার আসরের বিষয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের সিস্টেমের অভাব বলে দুঃখ প্রকাশ করেন।
মাজারে মোতায়েন নাটোর জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা মেলায় জুয়াসহ অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধে সচেষ্ট রয়েছেন। তবে মাজারের শত শত ভক্তদের মধ্যে গাঁজা সেবন বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন।