সহজে হাতের কাছে পাওয়ার সুবাদে ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। মিয়ানমারে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ইয়াবার চালানের সিংহভাগ পাচার হয়ে প্রবেশ করছে বাংলাদেশের ভেতর। সীমান্তরক্ষী বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের কড়া নজরদারি উপেক্ষা করে আসা ইয়াবা এখন গ্রামে হাতবদল হয়ে বিভিন্ন স্থানে পাচারসহ খোলামেলা বাজারজাত হচ্ছে।

ইয়াবার টার্নিং পয়েন্ট নামে খ্যাত কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি। সরেজমিন ঘুরে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার কাছ থেকে জানা যায়, বস্তিতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ইয়াবার ব্যবসায় জড়িত। তারা জানায়, যুবতী মহিলারা ইয়াবা বিক্রিতে সম্পৃক্ত হওয়ার সুবাদে যুবকরাও ইয়াবার প্রতি ঝুঁকেছে।

কুতুপালংয়ের বাসিন্দা আবু জানান, সন্ধ্যা নামার পরপরই দক্ষিণ কুতুপালং এলাকা ইয়াবার নগরীতে পরিণত হয়। দামি গাড়ি নিয়ে আসা অচেনা-অজানা লোকজন ইয়াবা সেবন করছে। সুযোগমতো ইয়াবার চালান নিয়ে অনায়াসে সটকে পড়ছে।

ডিএসবি সদস্য জানান, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার মূল চালান আসে জামতলী ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখান থেকে পাচার হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থামিয়ে ইয়াবা তল্লাশির অভিযান চালানোতে ইয়াবা চালান অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্ত কয়েক মাস ধরে সড়কপথে ভ্রাম্যমাণ তল্লাশি না থাকায় ইয়াবার বাণিজ্যে ফের বেড়ে চলেছে।

বালুখালী এলাকার শামসুল আলম নামের একজন জানান, ইয়াবা আসক্ত হয়ে তার সন্তান লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। ওই ছেলের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে সমাজে মুখ দেখাতে পারছেন না তিনি।

বালুখালীর হাতিরডেরা গ্রামের প্রবাসী নিয়ামত আলী জানান, অনেক কষ্ট করে প্রবাসজীবন কাটিয়ে উপার্জিত টাকা দেশের বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্ত ছেলে সব টাকা ইয়াবার পেছনে শেষ করেছে।

ইয়াবার আগ্রাসনের কারণে দুশ্চিন্তায় প্রতিটি পরিবার। পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এ এলাকায় প্রতিটি পরিবার তাদরে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। সবখানে অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রশাসন ইচ্ছে করলেই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের কাছে সোপর্দ করতে পারে।’

এ ব্যাপারে আলোকিত উখিয়ার সম্পাদক মিজান উর রশীদ বলেন, ইয়াবার মরণনেশা থেকে যুবসমাজকে রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের এক কাতারে একই স্লোগানে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031