পুরকৌশল বিভাগের উদ্যোগে সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ “ চট্টগ্রাম নগরীর জনবান্ধব সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা ” শীর্ষক সেমিনার সম্প্রতি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাদার্ন ইউনিভার্সিটির পুরকৌশল বিভাগের সহ. অধ্যাপক ড. বিজয় শংকর বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এম. আলী আশরাফ। সেমিনারে শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রবন্ধে অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এম. আলী আশরাফ চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক অবকাঠামো, যানবাহন ব্যবস্থাপনা, উড়াল সেতুর কার্যকারীতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিস্তারিত তথ্য ভিত্তিক আলাপ আলোচনা পাওয়ার পয়েন্ট প্রজেনটেশনের মাধ্যমে করেন। অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এম. আলী আশরাফ বশুরুজ্জামান চত্বরে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো কৌশল বিভাগের অধিনে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে, বশুরুজ্জামান চত্বরের ক্ষমতার চাইতে অর্ধেক গাড়ী এই জংশন দিয়ে চলাচল করে। গবেষণায় আরো পাওয়া গেছে রাস্তার আয়তন গোল চত্বরের অবস্থান ইত্যাদির জন্য দুর্ঘটনা ঘটে না।
এই দুর্ঘটনার জন্য আমাদের বদভ্যাস দায়ী, এই গোল চত্বরে টেম্পু স্ট্যান্ড, বাস স্ট্যান্ড, রাস্তার মাঝখানে যাত্রী উঠানো-নামানো, গাড়ী পার্কিং, রাস্তার উপর ভেন্ডারদের অবস্থান, রাস্তার উপর দোকান সাজিয়ে বসা, সাধারনের চলাচলের জন্য ফুটপাত না থাকা ইত্যাদি অনেকগুলি কারন এই জটলা, জীবনহানী এবং অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী।
উপযুক্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অল্প খরচে কিংবা বিনাখরচেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। নদীর অপার থেকে কণফুলী ব্রিজ পার হয়ে যে সব গাড়ী বহদ্দারহাট আসে তার প্রাই অর্ধেকর গন্তব্যস্থল সদরঘাট-আগ্রাবাদ, কিংবা সদরঘাট-নিউমার্কেট হয়ে রিয়াজউদ্দিন বাজার।
কর্ণফুলী ব্রিজ হতে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক সংযোগটি নিশ্চিত করা গেলে বহদ্দারহাট – মুরাদপুর – জিইসি – লালখান বাজার সড়ক অংশের ট্রাফিকের পরিমান অর্ধেকে নেমে আসবে। সিডিএ এর নিয়োজিত কনসালটেন্ট সিডিএ এভিনিউর সমান্তরাল একটি নতুন সড়ককে যানজট নিরসনের জন্য সর্বোত্তম পন্থা হিসেবে চিন্থিত করেছেন কিন্তু তারা জায়গার অভাবের কথা বলে নতুন সড়কের পরিবর্তে পুরনো সিডিএ এভিনিউর উপর দিয়ে উড়াল সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব করেছেন।
অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এম. আলী আশরাফ বলেন তাদের বক্তব্যে উল্লেখিত জায়গায় নেই কথাটি সত্য নয়। ১৯৯৫ সালের মাস্টার প্লানে বায়েজিদ-ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড সড়কের সাথে আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের মধ্যে সিডিএ এভিনিউর সমান্তরাল একটি নতুন রাস্তার কথা প্রস্তাব করা হয়েছিল।
সিডিএ গত ২০ বছর ধরে সেই এলাইনমেন্টটি পাহাড়া দিচ্ছে এবং সেই প্রস্তাবিত এলাইনমেন্টটের উপর কোন নতুন ভবন নির্মানের নকশা অনুমোদন দেয়নি। এই রাস্তাটি সিডিএ এভিনিউর উপর দিয়ে প্রস্তাবিত উড়াল সড়কের সাশ্রয়ী এবং অধিকতর কার্যোউপযোগী বিকল্প হতে পারে।
অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার এম. আলী আশরাফ আরও বলেন, উত্তর-দক্ষিন-১ এবং উত্তর-দক্ষিণ-২ নামে দুটি উত্তর-দক্ষিণ নতুন সড়ক এবং কর্ণফুলী ব্রিজ হতে সদরঘাট পর্যন্ত সংযোগ সড়ক হওয়া উচিত, আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। জনগণের টাকার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করাই আমাদের সকলের দায়িত্ব।