প্রায় পাঁচ মাস আগে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে । এখনও সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি। এতে হতাশায় ভুগছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১১ হাজার ৮৪৬ পরীক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন। গত বছর ২১ জুলাই নৈর্ব্যক্তিক (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০১৫ সালে পরীক্ষার মাধ্যমে আইনজীবী তালিকাভুক্ত করা হয়।
পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। যারা খাতা দেখেন সেই বিচারকের সংখ্যা কম। এছাড়া এনরোলম্যান্ট কমিটির সভাপতি ছিলেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি প্রধান বিচারপতি হওয়ায় সেই কমিটিও পুনর্গঠন হয়নি।’
বর্তমান কমিটি ফলাফল প্রকাশ করতে পারবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়াদ আরও দুই মাস আছে। আশা করছি এরমধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে পারবো।’
বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষা তিন ধাপে হয়ে থাকে। প্রথম ধাপে একজন শিক্ষার্থীকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দিতে হয়। প্রিলিমিনারিতে যারা পাস করেন তারা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। লিখিত পরীক্ষায় যারা পাস করবেন তারা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। এরপর আইনজীবী তালিকাভুক্তির চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়।
এ বছর লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন আশিকুজ্জামান। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘তিন বছর পর আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু পাঁচ মাস অতিক্রম করলেও এর ফল প্রকাশ হচ্ছে না। এতে আমাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে।’
নবীন এই আইনজীবী বলেন, ‘দিন যাচ্ছে আর শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের সংখ্যা পাহাড় সমান হচ্ছে। প্রতি বছর সামান্যসংখ্যক আইনজীবী হচ্ছে। এর ফলে আইনে পড়া ছাত্রদের জীবন বেকারত্বের মধ্যে থেকেই দুর্বিসহ হচ্ছে।’
আরেক ভুক্তভোগী মোকাররম হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতি বছর যেসংখ্যক আইনের ছাত্র পাস করছে সেই অনুপাতে আইনজীবী হওয়ার সংখ্যা একেবারেই কম। যার ফলে আইনে পাস করা শিক্ষার্থীদের বেকারত্ব দিন দিন বাড়ছে। পেশা জীবনে প্রবেশ করতে না পেরে আমাদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। আইন পেশায় থাকবো বলে অন্য কোনো চাকরিতেও প্রবেশ করিনি।’
ইমরান হোসেন নামে আরেক শিক্ষানবিশ আইনজীবী বলেন, ‘আইন পড়া শেষ করেছি ২০১৩ সালে, এখন ২০১৮। সর্বশেষ ২০১৫ সালে আইনজীবী তালিকাভুক্ত করা হয়। এ বছর লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে পাঁচ মাসের বেশি। কিন্তু এখনো ফল প্রকাশ হয়নি। রেজাল্ট না হওয়ায় সবার মধ্যে হতাশা কাজ করছে। পরীক্ষায় পাস না করলে আবারও প্রস্তুতি নিতে হবে। সেটাও হচ্ছে না।’