আজ বুধবার চট্টগ্রামের পটিয়া যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পড়েছে চট্টগ্রাম। পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে পুরো নগরীজুড়ে তৈরি করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনি। পাশাপাশি তৎপর রয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে তিন হাজারের অধিক পুলিশ সদস্য, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান, র্যাব, প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সসহ (এসএসএফ) বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছেন।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থা জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকাজুড়ে নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
শুধু জনসভাস্থল নয়; আশপাশের এলাকা ও কমলমুন্সির হাট এলাকায় নির্মিত হেলিপ্যাড এলাকায় প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে।
প্রায় সতের বছর পর শেখ হাসিনা পটিয়া আসছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবারই প্রথম। সরকারের শেষ মুহূর্তে তার এ সফর দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের কাছে ব্যাপক গুরুত্ব বহন করছে। উন্নয়নের পাশাপাশি প্রত্যাশা নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দাবি করা হচ্ছে নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পক্ষ থেকে।
চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আ.লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এই জনসভাকে ঘিরে পটিয়াজুড়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য চন্দনাইশের বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে একটি এবং পটিয়ার কমলমুন্সির হাট এলাকায় খালি জমিতে দু’টি হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে।
এখন এসব হেলিপ্যাড এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দিনরাত কাজ করছেন। জনসভার মঞ্চ তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিরাপত্তাজনিত কারণে জনসভাস্থলের আশপাশের ঘর বাড়িতে পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার ও আজ বুধবার দুই দিন পরিবারের সদস্যদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসভাস্থলের আশপাশের ঘরবাড়ি, বিভিন্ন অফিস আদালত, ব্যবসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া জনসভাস্থল ও আশপাশর এলাকায় চালানো হচ্ছে বিশেষ পরিচ্ছন্ন অভিযান। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘর বাড়ি ও দোকানের সাইনবোর্ড পরিষ্কার এবং নতুনভাবে রাঙানো হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ ব্যাপারে ঘরবাড়ি, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাস্তার দুইধারের ডিভাইডারগুলোতেও সাজসজ্জা করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর বিভাগ) মো. রেজাউল মাসুদ জানান, জনসভার দিন প্রধানমন্ত্রীর হেলিপ্যাড এলাকা থেকে শুরু করে জনসভাস্থল পর্যন্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ ‘হিউম্যান ট্রেন’ তৈরি করা হবে। জনসভাস্থল ও আশপাশে এসএসএফ, পিজিডি, পোশাকধারী পুলিশ ও সাদা পোশাকের চার স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরি করা হবে। সঙ্গে থাকবে মোবাইল পার্টি।
তাছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে ৫০টি উচ্চ মাত্রার ‘ক্লোজ সার্কিট’ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রাস্তায় ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে চন্দনাইশ থেকে ক্রসিং পর্যন্ত ৫শ’ ট্রাফিক পুলিশ দেয়া হয়েছে। জনসভার আশপাশে হাইরাইজ বিল্ডিংগুলোর উপর ও নিচে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশ সদস্যরা।
জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নেয়ামত উল্লাহ জানান, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী আসছেন। তাই এখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অবহেলার সুযোগ নেই। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের লোকজন সার্বক্ষণিক কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন।