প্রতি বছরের মত এবারও ভিড় জামিয়েছেন লাউড়েরগড় সীমান্ত নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় হাজার হাজার ভক্ত, আশেকান। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তবর্তী এলাকা লাউড়েরগড় শাহ আরেফিন (রহ.) ওরস মোবারকের সময় সবাই আশা নিয়ে আসেন মেঘালয় পাহাড়ে শাহ আরেফিন (রহ.)-এর আস্তানায় যাবেন।
২০০১ সালে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বর্ডার বন্ধ করে দেয় ভারতীয় বিএসএফ। এরপরও সবাই আশা নিয়ে আসলেও বর্ডার উন্মুক্ত করেনি বিএসএফ। ফলে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ১২০৩ পিলারের কাছে দাঁড়িয়ে অনেক দূরে মাজারের দিকে তাকিয়ে জিয়ারত শেষে মনে কষ্ট নিয়ে ফিরে যান ভক্ত ও আশেকান ২০০১ সাল থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেঘালয় পাহাড়ে শাহ আরেফিন (রহ.) আস্তানায় যেতে না পেরে এবারও মন খারাপ করে লাউড়েরগড় সীমান্ত নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা থেকেই চলে গেলেন নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের বাউল সাধক আব্দুল মন্নান। ১৯৮৪ সাল থেকে তিনি ওরস মোবারকের সময় লাউড়েরগড় সীমান্তে নিয়মিত আসেন। ২০০১ সালে সর্বশেষ তিনি ভারতে বাবর আস্তানায় যেতে পেরেছিলেন। এর পর থেকে তিনি প্রতি বছর এখানে আসেন, কিন্তু বর্ডার খুলে না দেয়ায় বছরে বছরে তিনি মনে কষ্ঠ নিয়ে ফিরে যান।
শুধু বাউল আব্দুল মন্নান নয় কথা হয় একই জেলার সদর থানার আলতাবুর রহামানের সাথে। তিনিও আক্ষেপ করে বললেন, এত দূর থেকে কষ্ট করে আসি। কিন্তু বর্ডার খুলে না দেয়ায় বাবার মূল আস্তানায় যেতে পারি না।
ঢাকা জেলার কামরাঙ্গির চর থানার ঝাউলা হাটি থেকে এসেছেন ফকির ডন খোকন। তারও একই বক্তব্য কষ্ট করে আসি, কিন্তু আশা পূরণ হয় না। বাবার আস্তানার পায়ের দুলো নিতে পারি না।
শুধু বাউল আব্দুল মন্নান কিংবা ফকির ডন নয়- এরকম অগণিত বাউল, সাধক, ফকির, ভক্ত-আশেকান প্রতি বছর শাহ আরেফিন (রহ.)-এর ওরস মোবারকের সময় ভিড় জামান লাউড়েরগড় সীমান্ত নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায়।
স্থানীয় বিভিন্ন ফকিরের কাছ থেকে আরো জানা যায়, হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর সফর সঙ্গী ৩৬০ আওলিয়ার অন্যতম জিন্দাপীর শাহ আরোফিন (রহ.) বাংলদেশ সীমান্তে লাউড়েরগড় গ্রাম নিকটবর্তী ভারতের মেঘালায় পাহাড়ে পাথরের গুহায় ইবাদত করতেন। আর এ ধারণা থেকেই যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর ওরস মোবারক পালন করে আসছেন হাজার হাজার ভক্ত আশেকান।
শাহ আরেফিন মাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনার কারণে ১৭ বছর ধরে শাহ আরেফিন বাবার আস্তানায় যেতে পারছেন না এ দেশের হাজার হাজার ভক্ত-আশেকান।