বেশ কয়েকদিন থেকেই জল্পনা চলছিল বলিউড অভিনেতা ইরফান খানের অসুস্থতা নিয়ে । কী বিরল অসুখ হয়েছে তার। তা জানা যাচ্ছিল না কোনোভাবেই। ভক্তসহ বলিউড অঙ্গনে কিছুটা দু:খের কালো মেঘ দেখা দিয়েছিল। ঠিক এমন সময়েই এক টুইট বার্তায় নিজের অসুস্থতার কারণ জানালেন বাংলাদেশে ‘ডুব’ সিনেমায় অভিনয় করা এ তারকা।
তিনি জানান, ‘নিউরোএন্ডোক্রিন টিউমার’ ধরা পড়েছে তার শরীরে। চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশ যাবেন তিনি।
কিছু দিন আগে আচমকাই টুইট করে ইরফান জানিয়েছিলেন তিনি ভালো নেই। কোনও এক বিরল রোগে আক্রান্ত তিনি। অনুরোধ করেছিলেন, এ নিয়ে যেন গুজব না ছড়ায়। যদিও তাতে উল্টোটাই হয়েছিল। ইরফানের অসুস্থতা নিয়ে শুরু হয়ে যায় নানাবিধ জল্পনা।
ইরফান লিখেছেন, ‘অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা আমাদের আরও পরিণত করে তোলে, ঠিক যেমনটা গত ক’দিন ধরে আমার সঙ্গে ঘটছে। জানতে পেরেছি আমার ‘নিউরোএন্ডোক্রিন টিউমার’ হয়েছে। সত্যিই খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। তবে আমার চারপাশে থাকা মানুষগুলোর ভালবাসা আমাকে শক্তি জোগাচ্ছে। নিজের মনের জোরও রাখছি। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ, পাশে থাকুন।’
অভিনেতা নিজেই জানিয়েছেন, যে পরিমাণ জল্পনা হচ্ছে তার রোগ নিয়ে, ‘নিউরো’ শুনেই কেউ যেন ব্রেনের অসুখ না ভাবেন। এ-ও লিখেছেন, ‘সব চেয়ে সহজ, গুগল করে দেখে নিন।’
চিকিৎসকরাও জানিয়েছেন, ‘নিউরোএন্ডোক্রিন টিউমার’ শরীরের যে কোনও জায়গায় হতে পারে। তবে মূলত অন্ত্র, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় ও এন্ডোক্রিন গ্ল্যান্ডগুলোতে হয়। এন্ডোক্রিন গ্ল্যান্ড ও স্নায়ুতন্ত্র থেকে এই ধরনের টিউমার তৈরি হয়।’
স্নায়ু বিশেষজ্ঞ তৃষিত রায় জানিয়েছেন, ‘টিউমারগুলো থেকে ‘সেরোটনিন’ নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যার ফলে রোগীর শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন, আচমকা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক মাত্রায় বুক ধড়ফড়, হট-ফ্লাশ। শরীরের ঠিক কোন জায়গায় টিউমারটি হয়েছে, তার উপরেও নির্ভর করে উপসর্গ ঠিক কী হবে। যেমন, অন্ত্রে হলে ডায়েরিয়ার মতো রোগ হতে পারে।’
তৃষিত জানিয়েছেন, এ ধরনের টিউমার ঠিক কার্সিনোমা অর্থাৎ ক্যানসার নয়। একে ‘কার্সিনয়েড’ (কার্সিনোমার মতো) বলে। প্রথম থেকে ঠিক মতো চিকিৎসা হলে রোগীর সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে যেহেতু ইরফানের ঠিক কোন ধরনের নিউরোএন্ডোক্রিন টিউমার হয়েছে জানা নেই, তাই এ নিয়ে বিশদ বলতে রাজি নন চিকিৎসকেরা। তাদের কথায়,‘ওঁর রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে নতুন করে জল্পনা না করাই ভাল।’
সূত্র: আনন্দবাজার