বান্ধবীকে ভিডিও কল দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ভারতের এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে । সাগর নামের ওই যুবক ভিডিও কল করার সময়েই গলায় রশি দিয়ে ঝুলে পড়েন।
হায়দ্রাবাদ সংলগ্ন সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনারেট এলাকার নেরেদমেট অঞ্চলে এই ঘটনাটি গত বুধবার ঘটলেও গতকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। খবর বিবিসির।
ভিডিওতে প্রথমে সাগরের মুখ দেখা যাচ্ছে। তারপরে সেই উইন্ডোটি ছোট হয়ে গিয়ে এক তরুণীর ছবি দেখা যাচ্ছে। কয়েক সেকেন্ড পরে তারপাশে বসা আরেক তরুণীকে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ছোট উইন্ডোতে দেখা যাচ্ছে ঘরের কোনায় ছাদ থেকে ঝোলা একটি দড়ি নিজের গলায় পরে নিচ্ছে ওই যুবক।
ততক্ষণ পর্যন্ত ওই দুই তরুণী মজাই করছিল- তাদের হাসাহাসির শব্দও শোনা যাচ্ছে স্পষ্ট। তারা সম্ভবত ভাবছিল যে সাগর মজা করছেন। কিন্তু গলায় রশি দিয়ে ঝুলে পড়তেই এক তরুণী চিৎকার করে ওঠেন।
নেরেদমেট থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ এম জগদীশ চন্দর বলেন, ‘সাগর নামে ওই ছেলেটির সঙ্গে ১৯ বছর বয়সীর একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তাদের দুজনের বাড়িতেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। বুধবার সকালে সাগর তার বান্ধবীকে হোয়াটস্অ্যাপে ভিডিও কল করে। তার মধ্যেই সে আত্মহত্যা করে।’
পুলিশ আরও বলছে, আজমীর সাগর তার দিদি-জামাইবাবুর বাড়িতে থেকে একটি কারিগরীবিদ্যার কোর্স করছিল। ঘটনার সময়ে তার বাড়িতে অন্য কেউ ছিল না। তাকে ফোন করে কোনও সাড়া না পেয়ে দিদি বাড়িতে ছুটে আসেন। ততক্ষণে সাগরের মৃত্যু হয়েছে।
জগদীশ চন্দর বলেন, ‘যে মেয়েটির সঙ্গে সাগারের সম্পর্ক ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি, সে আমাদের থানা এলাকার বাসিন্দা নয়। তাই তার সঙ্গে এখনও কথা বলে উঠতে পারি নি। একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছি।’
ভারতে আত্মহত্যার এরকম লাইভ সম্প্রচার এই প্রথম নয়। অন্ধ্রপ্রদেশে ফেব্রুয়ারি মাসে এক ছাত্রী তার ছেলেবন্ধুর সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করতে করতে হঠাৎই গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে। সেই বন্ধুটিই ছাত্রীটির হোস্টেলে দৌড়ে গিয়ে দরজা ভেঙে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। তবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মেয়েটির মৃত্যু হয়।
গতমাসে দিল্লির এক যুবকও একইভাবে আত্মহত্যার লাইভ সম্প্রচার করছিল ফেসবুকে। কিন্তু সেই ফেসবুক লাইভ ভিডিও দেখতে পেয়ে এক বন্ধু ওই যুবকের এক আত্মীয়কে খবর দেয়। এক প্রতিবেশীর সাহায্যে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয় ওই যুবককে। উদ্ধার করার সামান্য কিছুক্ষণ আগেই সে গলায় রশি দিয়ে ঝুলে পড়েছিল। জীবিত অবস্থাতেই উদ্ধার করার কারণে বেঁচে গেছে ওই যুবক।