বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান পাঁচ দশক আগে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের একমাত্র যাত্রী হিসেবে প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন। সেদিন মারা গিয়েছিলেন তার ২৩ সহযাত্রী। সেই কাহিনি তুলে ধরেছেন বিবিসি বাংলা।
১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দুই তারিখ। সেদিন ছিল বুধবার। আমেরিকার সাহায্য সংস্থা কেয়ারের তৎকালীন ঢাকা অফিসে চাকরি করতেন এম এ মান্নান। তখন বয়সে তরুণ মান্নানকে অফিসের কাজে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হতো।
সেদিন তাঁর কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বা পিআইএ তখন কিছু হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু করেছিল, যা তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের কিছু অঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করতো।
দুপুর দুইটা নাগাদ কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে আরোহণ করেন মান্নান। সব মিলিয়ে ওটাতে যাত্রী ছিল ২৪ জনের মতো যাত্রী ছিল।
হেলিকপ্টারটি ঢাকা থেকে প্রথমে ফরিদপুর হয়ে পরে কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা। ঢাকা থেকে ফরিদপুর যেতে ২২ মিনিট এবং ফরিদপুর থেকে কুষ্টিয়া যেতে ২০ মিনিট সময় লাগার কথা ছিল।
৫২ বছর আগের সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘ফরিদপুরের কাছাকাছি যখন হেলিকপ্টারটি পৌঁছায় তখন ওপর থেকে বিকট আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।’
‘মুহূর্তের মধ্যেই হেলিকপ্টারটি ঘুরতে-ঘুরতে মাটিতে পড়ে যায়। আমি তখন আল্লাহকে ডাকছিলাম আর মায়ের কথা ভাবছিলাম।’
মাটিতে পড়ার পর ওই হেলিকপ্টারের মধ্যে প্রচণ্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। প্রাণপণ চেষ্টা করে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার থেকে বেরিয়ে আসেন মান্নান। তখন ধানক্ষেতে কর্মরত কয়েকজন কৃষক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাদের বাড়িতে এবং পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
অনেকটা অলৌকিকভাবে জীবিত থাকা মান্নান ওই ঘটনা মনে করে এখনো নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।