‘টক্সিকোলজি’ টেস্ট করছেন চিকিৎসকরা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ক্রু সদস্যদের । সোমবার ৭১ আরোহী নিয়ে নেপালে বিধ্বস্ত হয় ওই এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। এতে ২৬ বাংলাদেশী সহ কমপক্ষে ৫১ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৪১টি লাশ সনাক্ত করা যাচ্ছে না। এসব মৃতদেহ পুড়ে বীভৎস রূপ ধারণ করেছে। এ খবর দিয়েছে নেপালের অনলাইন কাঠমান্ডু পোস্ট ও দ্য হিমালয়া।
এতে বলা হয়, ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালের (টিইউটিএইচ) ফরেনসিক বিভাগ ওই বিমানের নিহতদের ময়না তদন্ত করা হচ্ছিল। তারা যাচাই করে দেখার চেষ্টা করছিল, ওই বিমানের পাইলট আবিদ হাসান ও কো-পাইলটের শরীরে কোনো রকম বিষ বা বিষাক্ত পদার্থের প্রভাব ছিল কিনা। তাই তাদের দেহে এ ধরণের পরীক্ষা করা হচ্ছে। একে বলা হয় টক্সিকোলজি টেস্ট। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. প্রমোদ শ্রেষ্ঠা বলেছেন, আমরা দু’চার দিনের মধ্যেই রিপোর্ট পেয়ে যাবো বলে আশা করছি। এ ছাড়া আমরা আরো নানা রকম পরীক্ষা করছি। জানার চেষ্টা করছি, ক্র সদস্যরা কোন মারাত্মক রোগে ভুগছিলেন কিনা। এ জন্য শরীর থেকে তরল জাতীয় পদার্থ নিয়ে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এতে নিশ্চিত হওয়া যাবে তাদের দেহে এলকোহলের মাত্রা কি পরিমাণে ছিল এবং তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা কি ছিল তা বোঝা যাবে। এ ছাড়া তাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন হৃদপিন্ড থেকে নমুনা সংগ্রহ করার কথা চিকিৎসকদের। এর মাধ্যমে জানার চেষ্টা করা হবে যে, ক্রু সদস্যরা হার্ট এটাকে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা। অথবা তাদের মারাত্বক কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল তা জানার চেষ্টা হবে। ময়না তদন্তের সঙ্গে জড়িত এমন কয়েকজন ডাক্তার বলেছেন, সব মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়ে গেলেই আজ বৃহস্পতিবার থেকেই মৃতদেহ হস্তান্তর শুরু হবে। ওদিকে ডা. শ্রেষ্ঠা কাঠমান্ডু টাইমসকে বলেছেন, বুধবার নাগাদ তারা ৩০টি মৃতদেহের ময়না তদন্ত শেষ করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, আমরা শুধু আটটি মৃতদেহ সনাক্ত করতে পেরেছি চোখের দেখা দেখে। অন্যরা পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছেন। ফলে তাদেরকে শুধু চোখে দেখে সনাক্ত করা যায় নি। এখন বাকি যেসব মৃতদেহ আছে তা আঙ্গুলের ছাপ, কানের দুল, স্বর্ণালঙ্কার, চোয়ালের আকৃতি ও অন্যান্য পরিচিতিমুলক চিহ্নের সঙ্গে মিলিয়ে সনাক্ত করার চেষ্টা চলছিল। ডা. শ্রেষ্ঠা বলেন, এসব পদ্ধতি ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পরই আমরা ডিএনএ টেস্টের দিকে যাবো। উল্লেখ্য, সোমবারের ওই বিমান দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৪৯ জন নিহত হন। ১১ নেপালি সহ ২২ জন রক্ষা পান এ দুর্ঘটনা থেকে। মোট আরোহীর মধ্যে ৩৩ জন নেপালি, ৩২ জন বাংলাদেশী, একজন চীনা ও একজন মালদ্বীপের নাগরিক ছিলেন।