ঢাকার সাংবাদিকরা বরিশালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাপারসন সুমন হাসানকে নির্যাতনে জড়িত পুলিশ সদস্যদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। বিভাগীয় শাস্তির পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানানো হয়েছে। তারা জানান, প্রত্যাহারের নামে অতীতেও অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ‘জামাই আদর’ হয়েছে। এবার সেটা হলে কোনোভাবেই মানা হবে না।
বুধবার রাত ৯টায় কারওয়ান বাজারে একুশে টিভির সামনে মোমবাতি নিয়ে এক প্রতিবাদে এই দাবি জানানো হয়।
মঙ্গলবার বরিশালে মাদক উদ্ধার অভিযানে যাওয়া গোয়েন্দা পুলিশের আট সদস্যের সঙ্গে সুমন হাসানের বাক বিতণ্ডা হয়। এ সময় তার অণ্ডকোষ চেপে ধরে তাকে অজ্ঞান করে ফেলেন পুলিশ সদস্যরা। পরে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে বেধরক পেটানো হয়।
এই ঘটনায় ওই রাতেই গোয়েন্দা পুলিশের আট সদস্যকে প্রত্যাহার করে ঘটনা তদন্তে কমিটি করে বরিশাল মহানগর পুলিশ। জানানো হয়, এই কমিটির প্রতিবেদনের আলোকেই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ঘটনাটি ক্ষুব্ধ করেছে গোটা সাংবাদিক সমাজকে। এর প্রতিবাদে একুশে টিভির কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের ডাক দেয়া হলে এসে যোগ দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ আলম খান তপু ছাড়াও প্রায় দুইশ সাংবাদিক।
এ সময় সাংবাদিক নেতারা বলেন, পুলিশ সদস্য প্রত্যাহারের নামে ‘জামাই আদর’ না করে তদের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি জানান। তারা বলেন, অতীতে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় দোষী পুলিশ সদস্যদের শুধু মাত্র প্রত্যাহারের নামে তামাশা করা হয়েছে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘যে পুলিশ সদস্যরা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দদিতে হবে। যাতে করে ভবিষত্যে বিনা অপরাধে সাংবাদিকদের উপর হাত কেউ আর হাত না তুলে।
মানববন্ধনে বলা হয়, পুলিশের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ঘুষ বাণিজ্য তুলে ধরার কারণে এমন নির্যাতন চালানো হয়। তবে নির্যাতন চালিয়ে সাংবাদিকের কলম কখনও বন্ধ কর যায়নি, যাবেও না।
আগামী শনিবারের মধ্যে দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও জানানো হয় কর্মসূচি থেকে।
শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘আমরা সংবাদককর্মী’ ব্যানারে বৃহত্তর কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও আসে এ সময়।