সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘আমার স্ত্রী রওশন এরশাদ যদি পার্টির চেয়ারম্যান হতে আগ্রহী হন, তবে আমার কোনো আপত্তি নেই।
তিনি চাইলে আমি দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসারে তা লিখে দিতে রাজি আছি। কিন্তু আমি চাই, দলে যেন কোনো বিভক্তি না থাকে।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের নিজ কার্যালয়ে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, ‘মনে রাখবেন, এবারের কাউন্সিল আমাদের দলের জন্য অস্তিত্বের লড়াই। আমি জীবনের শেষপ্রান্তে চলে এসেছি। হয়তো আমার জীবনের এটাই শেষে কাউন্সিল। আমি আর আগামী কাউন্সিল নাও পেতে পারি। আমার বয়স হয়েছে। আমি চাই আপনারা বিভক্তি ভুলে আমার সন্তান জাতীয় পার্টিকে আমার অবর্তমানেও বাঁচিয়ে রাখবেন।’
দলীয় কাউন্সিল নিয়ে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকবার কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন হয়েছে। এবার আর কোনো পরিবর্তন নয়। নির্দিষ্ট তারিখ মোতাবেক আগামী ১৪ মে জাতীয় কাউন্সিল হবে। দলের সবাই বিভেদ ভুল স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নেবেন। আমি দলের প্রধান হিসেবে ৪০টি জেলা কাউন্সিলে নিজে উপস্থিত ছিলাম।’
‘জাপা গৃহপালিত বিরোধীদল’ স্বীকার করে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণত বিরোধীদল পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু আমরা প্রকৃত বিরোধী দল হতে পারিনি। হয়েছি গৃহপালিত বিরোধী দল। যদি প্রকৃত বিরোধী দল হতে পারতাম তবে আমরাও ক্ষমতায় আসতাম।’
বিএনপির সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ‘বিএনপি যেসব অপকর্ম করেছে তার সঠিক জবাব পাচ্ছে এখন। আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আল্লাহর সঠিক বিচার হয়েছে তাই বিএনপির আজ এ অবস্থা।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নির্বিচারে মানুষ হত্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এখন মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমার সময় তো র্যাব ছিলো না। আমি তো নির্বিচারে অহরহ গুলি করার কোনো হুকুম দেইনি। এখন এসব কী হচ্ছে? মানুষ কোনো কথা বলার অধিকার পাচ্ছে না। তাহলে এটা তো আমার সময়ের চেয়েও বেশি ছাড়িয়ে গেছে।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাপার কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, সাইদুর রহমান টেপা, আবু হোসেন বাবলা, মীর আব্দুর সবুর অসুদ প্রমুখ।