রাজধানীর পৃথক দুটি স্থানে দুই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তাদের পাষণ্ড স্বামী। এদের মধ্যে একজনের পচাগলা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, পরকীয়ার কারণে এ নির্মম হত্যা। অপর গৃহবধূ যৌতুকের বলি হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মধ্য বাড্ডা এলাকার একটি বাসা থেকে গলিত অবস্থায় শাহিদা বেগম (২২) নামের ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের বোনের জামাই মো. নাসির জানিয়েছেন, ওই এলাকার আলাতুন্নেছা স্কুল গলির একটি বাসার (গ/৫/এ) দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে গলিত অবস্থায় তার বোনের দেহ পড়ে থাকে। পরে পুলিশকে এ খবর দিলে বাড্ডা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নিহতের স্বামী মো. আনিস ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল বলেছেন, ‘আমরা ঘটনা শোনার পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘জামালউদ্দিন নামের এক যুবকের সঙ্গে শাহিদা বেগমের পরকীয়া ছিল। স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তারা ওই বাসায় ভাড়া নেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিন চারদিন আগে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে ঘরে মৃতদেহ রেখে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায় ঘাতক প্রেমিক।
‘লাশ পচে দুর্গন্ধ বেরোলে বাড়িওয়ালা পুলিশকে খবর দেয়। এ ব্যাপারে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
অপরদিকে, খিলগাঁওয়ের নবীনবাগ এলাকায় নেশাগ্রস্ত স্বামী শ্বাসরুদ্ধ করে ফাতেমা বেগম চৈতীকে (২২) হত্যা করেছে। ঘাতক স্বামী মো. রমিজ উদ্দিন।
নিহত ফাতেমার বড় ভাই জালাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বোনের পরিবারের লোকজন খবর দেন ফাতেমা অসুস্থ। খবর পেয়ে সকাল ১১টার দিকে তার পরিবারের সবাই ওই এলাকার আনু ভাণ্ডারির বাড়িতে যান, যেখানে তার বোন থাকতেন।
জালাল বলেন, ‘গিয়ে দেখি, আমার বোন চাদর মোড়ানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। এরপর তাকে উদ্ধার করে মুগধা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসক ঢামেকে প্রেরণ করেন। দুপুর পৌনে ৩টার দিকে ঢামেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।’
ঢামেক জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘ফাতেমার গলায় কালো জখমের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।’
তার ভাই আরও জানান, ফাতেমা তিন মাসের গভবর্তী ছিলেন। তার ফরহাদ নামের তিন বছরের একটি ফুটফুটে সন্তানও আছে।
জালাল অভিযোগ করেন, ফাতেমার বোনের স্বামী রমিজ গত সপ্তাহে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক চেয়েছিল। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল। বাকি টাকা না দেয়ায় নির্যাতন চালিয়ে আসছিল তার স্বামী।
যৌতুকের কারণেই তার বোনকে শ্বাসরোধ করে মেরে রমিজ উদ্দিন পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ ফাতেমার বড় ভাইয়ের।
তবে এ ব্যাপারে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করেছি। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’