বিয়ের দিনই ঘর থেকে পালালেন মেয়েটি। পালিয়ে চলে গেলেন প্রেমিকের কাছে। পুলিশের বড় কর্তার মেয়ের বিয়ে। বললেন আজই তাকে বিয়ে করতে হবে এবং এক্ষুণি ঢাকা ছাড়তে হবে না হলে বাবা তাদেরকে ধরে ফেলবেন। অতঃপর বন্ধুর সহযোগিতায় পালিয়ে চলে যান আরেক বন্ধুর বাড়ি রাজশাহীতে। যাওয়ার পথে পরিচয় হয় আরেক মেয়ের সঙ্গে, যে কিনা ভয়ঙ্কর রকমের ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত। সেও তাদের সঙ্গে যায়, পথে নানা ঘটনার জন্ম দেয় তারা। এক পর্যায়ে তারা রাজশাহী পৌঁছে যায় এবং ভুল বুঝতে পেরে আবার ঢাকায় ফিরে আসে।
এরকমই একটি গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে একক নাটক ‘চলো পালাই’। মেহেদী হাসান সজীবের রচনা ও মামুন খানের পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন, শ্যামল মাওলা, সানজিদা তন্ময়, ফারজানা রিক্তা, রিয়াজুল রিজু সহ অনেকে।
এ প্রসঙ্গে অভিনেতা শ্যামল মাওলা বলেন, গল্পটি খুবই সুন্দর, সাধারণত আমরা যে টাইপের গল্পে অভিনয় করি বা দেখে থাকি তার থেকে ব্যতিক্রম একটি গল্প। পরিচালকও খুব যত্ন সহকারে নির্মাণ করেছেন, আশা করি দর্শকদের ভালো লাগবে। এর থেকে বেশি কিছু বললে দর্শককে আর দেখানোর কিছু থাকবে না।
পরিচালক মামুন খান বলেন, আমি এর আগেও দুটি নাটক পরিচালনা করেছি, নাটক দুটির গল্পও ভিন্ন ধরনের ছিলো এবং আমার নাটক সবসময় ন্যাচারাল রাখতে চাই। তারই ধারাবাহিকতায় এই নাটকটির গল্পেও ভিন্নতা এনেছি এবং ন্যাচারাল রাখার জন্যই সকলে যেখানে খরচ বাঁচাতে উত্তরা কিংবা গাজীপুরের বাহিরে যেতে চান না, সেখানে আমরা রাজশাহী পর্যন্ত গিয়ে শুটিং করেছি, আশা করছি আমার আগের নাটকের থেকেও বেশি সাড়া পাবো এই নাটকটিতে।
অভিনেত্রী সানজিদা তন্ময় বলেন, পালিয়ে বিয়ে করার আনন্দই আলাদা যেটা এই নাটকের মাধ্যমে আমি উপলদ্ধি করতে পেরেছি। যখন আমি বিয়ের দিন আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে পালিয়ে যাই। তবে এটাও ঠিক যে এভাবে পালিয়ে বিয়ে করাটা মোটেও ঠিক না, ফ্যামিলি তথা বাবা-মাকে কষ্ট দেওয়া ঠিক না। এবং আমরা যখন বুঝতে পারি তখন আমরা আবার ঢাকায় ব্যাক করি। নাটকটির শুটিং করার সময় মনে হয়েছে যে আমি সত্যিই পালিয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছি, আমার কাছে মনেই হয়নি যে এটা স্রেফ অভিনয়।
অভিনেত্রী ফারজানা রিক্তা বলেন, আমাদের তো প্রায় প্রতিদিনই শুটিং করতে হয়। শুটিং করতে করতে একঘেয়েমি চলে আসে তাই মাঝে মাঝে কোথাও ঘুরতে যাই। তবে এবার আর নিজের খরচে ঘুরতে যেতে হলো না, কারণ শুটিংটি আমরা এভাবেই করেছি যে আমাদের কাছে মনেই হয়নি আমরা শুটিং করছি বরং আমার কাছে মনে হয়েছে আমরা কোন ট্যুরে যাচ্ছি। নাটকটির শুটিং করে খুব এনজয় করেছি।
প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনেতা রিয়াজুল রিজু বলেন, বর্তমান সময়ে যতই দিন যাচ্ছে আমাদের নাটকের মান ততই কমে যাচ্ছে, এর প্রধান কারণ হচ্ছে নাটকের বাজেট। টেলিভিশন চ্যানেলগুলি কিংবা এজেন্সিগুলি খুব একটা বাজেট আমাদেরকে দেয় না, যে বাজেট দেয় তার উপর নির্ভর করেই আমরা গল্প লিখি এবং যতটুকু সম্ভব কম খরচ করে যেন নাটকটি শেষ করতে পারি সকলে সে চিন্তায় মগ্ন থাকি তাই এমনটি হয়। এই নাটকটির ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি, যদিও বাজেট কম তবুও আমরা চেষ্টা করেছি ভালো কিছু বানাতে। আমি জানি যে টাকা দিয়ে এই নাটক বানানো হচ্ছে কোন টেলিভিশন চ্যানেল বা এজেন্সি এত টাকা দিবে না মানে এই নাটকটি একটি লস প্রজেক্ট তবুও তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে চাই যে বাজেট টা যদি তারা একটু বেশি করে তাহলে আমাদের নাটকের মান বহুগুণে ভালো হবে এবং দর্শকরা আর বিদেশি চ্যানেলের দিকে মনোযোগি হবে না।
কারুকাজ প্রোডাকশনের প্রযোজনায় গত ৯ এবং ১০ মার্চ ঢাকা থেকে শুরু করে হাইওয়ে ধরে রাজশাহী পর্যন্ত নাটকটির শুটিং হয়। এতে প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে ছিলেন আর কে সরকার রকি, সহকারী পরিচালক হিসেবে ছিলেন আব্দুল মঈদ শাকিল, ক্যামেরাম্যান হিসেবে ছিলেন আরমান হুসাইন এবং প্রোডাকশন কো-অর্ডিনেটর হিসেবে ছিলেন ইমদাদুল ইসলাম (যিকরান)।
পরিচালক জানান আগামী ঈদুল ফিতরে স্বনামধন্য একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে নাটকটি প্রচারিত হবে।