পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান এই বিমানবন্দরেই একশবার নিরাপদে অবতরণ করেছিলেন নেপালের ত্রিভূবন বিমানবন্দরটি বিপজ্জনক, সেই তথ্য এরই মধ্যে এসেছে গণমাধ্যমে। তবে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমান চালনায়ও তিনি বেশ অভিজ্ঞ ছিলেন।

ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম মঙ্গলবার বারিধারায় প্রতিষ্ঠানটির করপোরেট কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

এর আগের দিন ক্যাপ্টেন আবিদ ও কো-পাইলট পৃথুলা রশীদের পরিচালনায় ফ্লাইটটি অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। মোট ৬৭ জন যাত্রী এবং চারজন ক্রু ছিল এতে। এদের মধ্যে ৫০ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে নেপালি কর্তৃপক্ষ।

দুর্ঘটনার দিনেই পৃথুলা নিহত হন। তবে ক্যাপ্টেন আবিদ বেঁচে গিয়েছিলেন। একটি হাসপাতালে মঙ্গলবার মারা যান তিনি।

ইউএস বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল জানান, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সেই ক্যাপ্টেন আবিদের এক হাজার ৭০০ ঘণ্টা ফ্লাইট পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিল। আর সব মিলিয়ে তিনি আকাশে বিমান উড়িয়েছেন পাঁচ হাজার ঘণ্টা।

‘কাঠমান্ডুতে শতাধিক বার ল্যান্ডিং করার অভিজ্ঞতা আছে। কাজেই তিনি অবশ্যই একজন দক্ষ পাইলট ছিলেন।’

ক্যাপ্টেন আবিদ তার চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তবে তাকে অন্য একটি সংস্থায় চাকরি নিতে বাধা দিয়ে এই ফ্লাইট চালাতে বাধ্য করা হয়েছে বলে একটি গণমাধ্যমে তথ্য এসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএস বাংলার জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, ‘ককপিটে বসে ফ্লাইন শুরু করার আগ মুহূর্তে কোনো পাইলট যদি শুরু করেন, তিনি ফিট না, তাহলে তিনি নেমে আসতে পারেন। অথোরিটির কোনো অধিকার নেই তাকে চাপ দেয়ার। আপনার কাছে মনে হয় ভুল ম্যাসেজ আছে। আমি সবাইকে বলব ভুলভ্রান্তিমূলক কোনো তথ্য আপনারা প্রচার করবেন না।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে কামরুল জানান, নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ইউএসবাংলা এয়ারলাইন্সের যে বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়েছিল, সেটির সঙ্গে নেপালে বিধ্বস্ত বিমানের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘১০০ শতাংশ ভুল তথ্য মিডিয়াতে আছে।… এই এয়ারক্রাফট সেই এয়ারক্রাফট নয়। এটি সম্পূর্ণ আলাদা একটি বিমান।

নেপালের ত্রিভূবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কট্রোল টাওয়ারের (এটিসি) ভুল সংকেতের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে-সেটি আগের দিনই দাবি করেছেন ইউএস বাংলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আসিফ।

আজ কামরুল ইসলাম সেই কথা আবারও জোরের সঙ্গে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘লাস্ট মিনিট যে এটিসি ও পাইলটের মধ্যে যে কথোপকথন সেটা ব্ল্যাক বক্সে সংরক্ষিত থাকে। সেই ব্ল্যাক বক্স এরই মধ্যে উদ্ধার হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস কনভারসেশন মিলিয়ে পজেটিভ কিছু পেয়ে যাব।’

‘কাল ইউটিউবেও এই‌ কথোপকথন প্রকাশ হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়া এমনকি নেপালি মিডিয়াও এটিসিকে দায়ী রেছে। এখানে নেপাল সিভিল এভিয়েশন, বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস এই বিষয়ে এক সঙ্গে কাজ করবে।’

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সেই বিমানবন্দরে আমরা ৭০টি দুর্ঘটনা দেখেছি, সেখানে এটা নতুন কিছু না। এ নিয়ে একটা তদন্ত করা দরকার। বাংলাদেশ সরকার এবং নেপালের সরকারের মিলিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা দরকার।’

ত্রিভূবন বিমানবন্দরের এসিটির সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নে ইউএস বাংলার কর্মকর্তা বলেন, ‘অবশ্যই। কাঠমান্ডুতে আমাদের একটি টিম এই মুহূর্তে অবস্থান করছে। তারা এটিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কথা বলেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আপনাদেরকে পরে জানাতে পারব।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031