নির্মাতাদের কাছে আস্থা তৈরি করেছেন দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী রুনা খান। একজন দক্ষ অভিনেত্রী হিসেবে বেশ আগেই। চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের জন্য নির্মাতাদের পছন্দের তালিকায়ও থাকেন এই অভিনেত্রী। কিছু কিছু চরিত্রের জন্য তার বিকল্প অন্য কাউকে ভাবা যায় না। সহকর্মিরাও তার অভিনয়ের প্রশংসা করেন। বছরের পুরোটাই এই অভিনেত্রী ছোট পর্দার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
বিশেষ করে বিভিন্ন টিভি ধারাবাহিকে থাকে তার সরব উপস্থিতি। এ প্রসঙ্গে রুনা খান বলেন, যে সকল শিল্পী অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিয়েছেন তাদের ধারাবাহিকে কাজ করতে হয়। কারণ আমাদের দেশে বিশেষ দিবসের বাইরে একক নাটক নির্মাণের সংখ্যা কম। ফলে আমাকেও নিয়মিত ধারাবাহিকে কাজ করতে হচ্ছে। এই অভিনেত্রীর হাতে এখন অনিমেষ আইচের ‘জোসনাময়ী’, মেহেদি হাসান টিংকুর ‘সংগ্রাম’ ও কায়সার আহমেদের ‘রুপারী প্রান্তর’সহ বেশ কিছু ধারাবাহিকের কাজ রয়েছে বলে জানান। একক নাটক ও টেলিছবিতেও রুনার রয়েছে সরব উপস্থিতি। সম্প্রতি তিনি তপু খানের ‘সময়ের গল্প’ শিরোনামের একটি একক নাটকে কাজ করেছেন। এছাড়া আসছে স্বাধীনতা দিবসে ‘গোপিত’ শিরোনামের একটি টেলিছবিতেও তাকে দেখা যাবে। দয়াল সাহার গল্পে এটি নির্মাণ করছেন সাজ্জাদ সুমন। এটিতে তিনি জয়ন্ত চট্রোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। এই প্রথমবারের মত জয়ন্ত চট্রোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন বলে জানান রুনা। এর আগে বেশ কিছু নাটকে জয়ন্তকে বাবা বা শশুরের চরিত্রে পেয়েছেন তিনি। রুনার ভাষ্য, জয়ন্ত দা গুণী একজন অভিনেতা। তার সঙ্গে কাজের সময় অনেক কিছু শেখা যায়। বিশেষ করে তিনি একজন আবৃত্তিকার। শুটিংয়ের সময় তার কাছ থেকে শুদ্ধ ভাষা শেখা যায়। এই টেলিছবিতে গল্পের প্রয়োজনেই আমাদের জুটি বেঁধে কাজ করতে হয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের টেলিছবির সূত্র ধরে রুনার কাছে জানতে চাওয়া দেশ নিয়ে তার ভাবনা কি? মহান মুক্তিযুদ্ধকে তিনি কিভাবে দেখেন? রুনা বলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গায় সৎ থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গৌরবময় ইতিহাস। দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধে যাদের অবদান রয়েছে তারা প্রত্যেকে আমাদের পূজনীয় বলে আমি মনে করি। তাদের কারণে আজ আমরা স্বাধীন একটি দেশ পেয়েছি। সুন্দর ভাবে বাঁচার অধিকার পেয়েছি। গেলো বছরের ডিসম্বরে ছোট পর্দার এই অভিনেত্রীর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। ১লা ডিসেম্বর তার অভিনীত তৌকীর আহমেদের ‘হালদা’ ও সাজেদুল আউয়ালের ‘ছিটকিনি’ চলচ্চিত্র দুটি মুক্তি পেয়েছে। ডিসেম্বরের শেষে দিকে মুক্তি পায় ‘গহীন বালুচর’ শীর্ষক আরো একটি চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন বদরুল আনাম সৌদ। তবে চলতি বছরে এখনো নতুন কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি তাকে। রুনা বলেন, চলতি বছরের শুরুতে একটি ছবির প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু ব্যাটে-বলে মিলেনি বলে করা হচ্ছে না। নতুন ছবির বিষয়ে চূড়ান্ত হলে আমি অবশ্যই সবাইকে জানাবো। তিনি আরো বলেন, চলচ্চিত্র অনেক বড় একটি মাধ্যম। একটি ছবি আজকে মুক্তির পর হয়তো ৫০ বছর পরেও দর্শক সেটি দেখছেন। কিন্তু ছোট পর্দায় একটি নাটক প্রচারের পর সেটির আর কোনো রেশ থাকে না। সেই কারণে আমি ভালো গল্পের চলচ্চিত্রে কাজ করতে আগ্রহী। অভিনয় নিয়ে চলতি সময়ের এই অভিনেত্রীর পরিকল্পনা কি? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় আমার কাছে মুখ্য বিষয়। একজন সু-অভিনেত্রী হয়ে দর্শকের মনে থাকতে চাই। বৈচিত্র্যময় গল্প-চরিত্রে অভিনয় করা আমার সব সময়ের ইচ্ছে। আলাপনের সর্বশেষে এই অভিনেত্রী অভিনয়ের বাইরে কি করেন জানতে চাইলে জানান, পরিবারের সঙ্গেই তার সময় কাটে। সম্প্রতি এক মাস পারিবারিক বিদেশ ট্যুরের পর গেল ২২শে ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে ফিরেছেন। এই সময়ে নিউজিলান্ড ও অস্ট্রেলিয়ারও বিভিন্ন দর্শণীয় স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন বলে জানান তিনি।