৪ শিক্ষার্থীসহ ৬জন হামলার শিকার হয়েছেন অসুস্থ সহপাঠীকে হাসপাতালে রেখে ফেরার পথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের । আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে ভাংচুর চালিয়ে দুই শিক্ষার্থী ও চালককে আহত করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। শিক্ষার্থীদের গলায় ছুরি ধরে মোবাইল, নগদ টাকা, মেয়েদের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। দায়িত্ব পালন না করে বাশি বাজিয়ে পুলিশ তাদের পালাতে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভুগিরা।
সূূত্র মতে, গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে অসুস্থ বান্ধবিকে মাগুরার একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের ৪ সহপাঠী ও খালেদা জিয়া হলের এক আয়া। পরিবারের কাছে বান্ধবীকে রেখে তারা রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঝিনাইদহ হয়ে ক্যাম্পাসে রওনা দেয়। এসময় শৈলকুপা থানাধীন গাড়াগঞ্জ এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সের গতি রোধ করা হয়।
গাড়ি থামতেই ৫/৬ জন চাপাতি, রামদা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের চতুর্দিকের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। এসময় ড্রাইভার আবদুল খালেক ও মাসুদ রানা রামদার আঘাতে গুরুতর আহত হয়। তারা মুস্তাকিম ইসলাম নামের একজনের গলায় রামদা ধরে সকলের মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিতে থাকে। সবকিছু না দিলে ‘মাথা কেটে ফেলবো’ বলে হুমকি দেয় তারা। এসময় হামলাকারীরা মেয়েদের কান ও গলার স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। তিন দফায় তাদের গাড়িতে এভাবে ছিনতাই হলেও হাইওয়ে পুলিশের কোন ভুমিকা ছিল না বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভুগিরা। তারা বলেন, ‘পুলিশ বাশি বাজিয়ে হামলাকারীদের পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। পুলিশের সাথে হামলাকারীদের যোগসাজশ আছে বলেই তারা পালাতে পেরেছে।’ অভিযোগ উঠেছে, গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে ডাকাতি প্রমাণ করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ভিসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাকে ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে।
ঘটনার পর বেলা ১১টায় ভিসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে আরবী বিভাগ ও শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টায় অনুষদ ভবনের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে দুপুর দেড়টায় আহতদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ঝিনাইদহ পুলিশ ও সরকারের ঊর্ধŸতন মহলের কাছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান। অতি দ্রুত হামলাকারীদের সনাক্ত ও বিচারের জোর দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে আহতদের ক্ষতিপূরণ ও মহাসড়কের বিপদজ্জনক এলাকায় নিরাপত্তা চৌকি স্থাপনের দাবিও করেন তারা।