আরো শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে স্বদেশ মিয়ানমার ছেড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে ফিশিং বোটে করে  । বঙ্গোপসাগর হয়ে টেকনাফ উপকূল দিয়ে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গারা তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু ঘটেছে এবং এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। নিহত শিশুদের স্থানীয়ভাবে দাফন করা হয়েছে। পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গারা ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভোরে সাবরাং মুন্ডার ডেইল সৈকত উপকূল পয়েন্ট দিয়ে এপারে ঢুকে। প্রচন্ড কুয়াশায় কুলে ভিড়ার সময় বোট ডুবে গিয়ে তিন রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু ঘটে এবং অপর এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। তারা মিয়ানমারের বুছিডং থানার ওলাফে গ্রামের বাসিন্দা। নিহতরা হচ্ছে আবদুল হাইয়ের পুত্র আবদুন নবী (৯ মাস), মোঃ ইয়াছিনের মেয়ে উম্মে সালমা (৪ বছর), আবদুল আজিজের পুত্র মোঃ আয়ুব (৭ মাস) ও নিখোঁজ শিশুর পরিচয় পাওয়া যায়নি। খুরেরমুখ বিওপির বিজিবি কমান্ডার সাইফুল জানান, পালিয়ে আসা ৫১ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাঈন উদ্দিন খাঁন নৌকা ডুবির ঘটনায় তিন শিশুর মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করে জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগীতায় নিহত শিশুদের স্থানীয়ভাবে খুরেরমুখ কবস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে টেকনাফ সদরের মিঠাপানিরছড়া সৈকত পয়েন্ট দিয়ে ভোরে আরো অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা এপারে ঢুকেছে। পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গারা সকলে আরাকান রাজ্যের বুছিডং থানার হান্দং, উলাফে ও সিন্দিপ্রাংয়ের বাসিন্দা। উলাফে গ্রামের ছৈয়দ হোসেন (২৬) জানান, তীব্র খাদ্য সংকটের কারনে নিজ দেশ ছেড়ে এপারে চলে এসেছে। তার পরিবারের ৫ জনসহ আরো ৭ পরিবার একই সাথে গত শুক্রবার নিজ ঘর থেকে বের হয়ে নাইক্ষ্যংদিয়া নামক সীমান্ত হয়ে ধংখালী সীমান্ত থেকে রাত ১১ ট ার দিকে ফিশিং বোট করে ভোর তিন টায় এপারে ঢুকে।
তাদের সাথে আসা একই এলাকার পঁচাশি বছরের এক বৃদ্ধের সাথে এপ্রতিবেদকের দেখা হয়। সে মৃত তৈয়ুম গুলালের ছেলে আবদুল জব্বার। তার সাথে রয়েছে স্ত্রী হোছন বানু (৭৫) ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মেয়ে নুর আয়েশা (৫৫)। আবদুল জব্বার জানায়, গত আগস্টে সহিংসতা শুরু হলে তাদের রেখে ৩ ছেলে ও পরিবার এপারে চলে আসে। তারা এলাকায় ভিক্ষা করে অর্ধাহারে অনাহারে এপর্যন্ত দিন যাপন করলেও অবশেষে এপারে চলে আসেন। তার ছেলেরা কোথায় এখনো জানেনা।

এদিকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি অংশ টেকনাফ পৌর স্টেশনের আবু ছিদ্দিক মাকের্টে এসে জড়ো হয়। সেখানে পুলিশের বিশেষ টহল দলের সদস্যরা তাদের তালিকাভ’ক্ত করে হারিয়া খালী সেনা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়। কিছু রোহিঙ্গা নিজেরাই আত্মীয় স্বজনের সহযোগীতায় বিভিন্ন ক্যাম্পে চলে যায়।

এখানে দায়িত্বরত এসআই পাবন চক্রবর্তী জানান, সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৫০ জন রোহিঙ্গাকে তালিকাভূক্ত করে সাবরাংয়ের হারিয়াখালী অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031