শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে চলা ধর্মঘটে হামলা চালিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত ৭জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ছাত্রজোটের নেতারা। এদিকে হামলাকারী ছাত্রলীগের কেউ নয় বলে দাবি করেছে শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি রুহুল আমিন এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান।
ছাত্রজোটের নেতা তৌহীদুজ্জামান জুয়েল জানান, হামলায় জয়দ্বীপ দাস নামে ছাত্রফ্রন্টের এক কর্মীর মাথা ফেটে যায় এবং ছাত্রফ্রন্টের সিলেট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদ, ছাত্রজোটের কর্মী এমকে মুনিম, আব্দুল্লাহ হেল কাফী, মঈনদ্দীন মিয়া, সুভাষ ঘোষ আহত হয়। জয়দ্বীপ দাস তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৮টার দিকে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের বাস বন্ধ করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে সকাল ১০টা দিকে ক্যাম্পাস থেকে মিছিলসহ প্রধান ফটক গিয়ে ফটক বন্ধ করে দেয় এবং অবস্থান নেয়।
১১টার দিকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে শাখা ছাত্রলীগের নেতা মুশফিকুর রহমান জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের মারধর করে এবং প্রধান ফটক খুলে দেয়।
এদিকে শাবি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হামলায় জড়িতদের নিজেদের সংগঠনের কেউ নয় দাবি করেছে ছাত্রলীগ সভাপতি রুহুল আমিন এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান। তারা হামলাকারীদেরকে দুষ্কৃতিকারী বলে উল্লেখ করেন।
যোগাযোগ করা হলে মুশফিকুর রহমান জিয়া বলেন, ‘আমি একজন পরিক্ষিত ছাত্রলীগ কর্মী। আর বামপন্থীরা আমাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিলে তখন আমি তাদের গেইট খুলে দিতে অনুরোধ করি কিন্তু তারা উল্টো আমার উপর চড়াও হয়। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে গেইট খুলে দেই। এতে সাব্বির আহমেদ নামে ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ঘটনাটিকে খুবই দুঃখজনক বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। বিস্তারিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রাবিতেও হামলা: w
ওদিকে, আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের কর্মসূচীতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা সোমবার সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ৮টা ১০ মিনিটে তারা ক্যাম্পাসের বাস আটকে দেয়। সকাল ৯ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন ও ফিরোজ মাহমুদের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তারা ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িতে পড়েন। একপর্যায়ে তারা ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের সহায়তায় ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ থেকে তারা ঢাবিতে নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তির দাবি জানায়। এছাড়া রাবির কর্মসূচিতে প্রশাসনের মদদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কর্মকর্তাদের হামলার নিন্দা ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়।