২ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে শৃঙ্খলা কমিটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষিকা উম্মে সায়কা ও নাহ্রিন ইসলাম খানের সাথে শিক্ষার্থীর বাকবিতণ্ডার ঘটনায় । সোমবার শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, আইন ও বিচার বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের আরমানুল ইসলাম খান ও ৪০তম আবর্তনের নুরুদ্দিন মুহাম্মাদ সানাউলকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে শৃঙ্খলা কমিটি। সুপারিশটি সিন্ডিকেটের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সূত্রটি আরো জনান, সুপারিশ প্রাপ্ত আরমান স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আর নুরুদ্দিন মুহাম্মাদ সানাউলের ছাত্র জীবন শেষ। তাই বহিষ্কারকালীন সময়ে সানাউলের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সনদপত্র আটকে রাখা হবে।
২৬শে জানুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় খাবার খেতে গিয়ে গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে শিক্ষিকাদ্বয়ের সাথে শিক্ষার্থীদের বাকবিতন্ডা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য মতে, ওই শিক্ষিকার গাড়ি রাস্তার পাশে পাকিং করায় শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছিল।
তাই আরমান তাকে গাড়িটি অন্যত্র পার্কিং করতে বললে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। ওই দিন সন্ধ্যায় শিক্ষিকা-দ্বয় ‘ছাত্র দ্বারা শিক্ষিকা লাঞ্ছিতের’ অভিযোগ তুলে প্রকটর বরাবর বিচার দাবি করেন। অপরদিকে ‘শিক্ষিকা কর্তৃক অশোভন আচরণ, শারীরিক লাঞ্ছনা ও হুমকি’র অভিযোগ এনে প্রকটর বরাবর বিচার দাবি করেন আরমান। অভিযোগ পেয়ে রবিবার উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন প্রকটর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা।
অপরদিকে একইদিন সকালে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের একাডেমিক বৈঠকে ওই ২ শিক্ষার্থীর বিচারের দাবিতে আগামী ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষকরা।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিচারিক কাজের শুরু থেকেই সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর সামরিক বহিষ্কারের সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন ‘সামনের শুক্রবার ও শনিবার ক্যাম্পাসে গাড়ি ভাঙ্গা উৎসব করবো, প্লিজ আমাকেও বহিষ্কার করুন। আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন ‘আজ আমরা কান থাকতেও বধির, চোখ থাকতেও অন্ধ। বিবেক আজ স্বার্থও অর্থের কাছে বিক্রি। এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করাও অন্যায়। আর কতদিন আমরা মুখ বুজে থাকব। ছাত্র নেতৃত্বের এতো দুর্বলতা কেন? ছাত্রদের প্রয়োজনে পাশে না দাঁড়ালে এমন ছাত্র নেতৃত্ব থাকার কোন প্রয়োজন নাই।’
তবে সামান্য অপরাধে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পেছনে জাকসু অকার্যকরের কথাও উল্লেখ করেছেন অনেকে। মুজাম্মেল ইসলাম সুমন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন ‘কিছু হলেই বহিষ্কার। এই ধরণের একচোখা সিদ্ধান্ত নিতেই জাকসু অকার্যকর করে রেখেছে এই স্বার্থান্বেষী চক্র। সময় এসেছে এই নৈরাজ্যের বিপক্ষে মাথা তোলার।