ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী হামলার শিকার হয়েছেনইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের । শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে ঝিনাইদহের বড়দাহ এলাকায় তিনি আক্রান্ত হন। চালকের দক্ষতা আর ভাগ্যের জোরে তিনি অক্ষত অবস্থায় পালিয়ে বেঁচেছেন। ভিসির বক্তব্য এবং ঘটনাস্থলের আলামতে হামলার ঘটনা পরিকল্পিত হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঘটনার বর্ণানায় ভিসি বলেন, ‘রাত দশটার দিকে আমরা ঢাকা থেকে রওনা দেই। গোয়ালন্দ ঘাট থেকে ড্রাইভার ফরহাদকে ঝিনাইদহ হয়ে ক্যাম্পাসে যাবার নির্দেশ দেই। আমার ব্যাক্তিগত সহকারী রেজাউলকে ঝিনাইদহ শহরে নামিয়ে আবার ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করি।

পথিমধ্যে গাড়াগঞ্জের ব্রীজ পার হয়ে বড়দাহ এলাকয় আসতেই সামনে বড় একটি গাছ ফেলা দেখি। বিপদ মনে করে ড্রাইভারকে গাড়ি পেছনে ঘুরিয়ে নিতে বলি। পিছনের দিকে যেতেই ৩/৪জন রাম দা দিয়ে গাড়িতে কোপাতে শুরু করে। এতে বাম দিকের দুটি গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এসময় তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। পরে ড্রাইভার আবারো সজোরে সামনে এগিয়ে গাছের সামনে দাড়িয়ে যায়। হামলাকারীরা পেছনে পড়ে গেলে আমি গাড়ি থেকে নেমে পাশের ঝোপে আশ্রয় নেই। পরে তারা লাইট নিয়ে আমাকে খুজে বের করে গাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় তারা টাকা কই বললে আমার ব্যক্তিগত ল্যাপটপ নিতে বলি। তারা ল্যাপটপ না নিয়ে আমাকে চুপ করে দাড়িয়ে থাকতে বলে। আমি আবার গাড়িতে উঠে কিছুক্ষণ বসে থাকি। আমি পুণ:রায় হামলার ভয়ে আবার নেমে সামনের দিকে দৌড়ে পালিয়ে এক বাড়িতে আশ্রয় নেই। সেখান থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে খবর দেয়া হয়। তারা আমাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেয়।

এদিকে হামলার আলামত ও ধরণ নিয়ে ক্যাম্পাসে ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবার ভিসি কুষ্টিয়া হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরলেও এবার তিনি ঝিনাইদহ হয়ে আসছিলেন। রাস্তায় যে গাছ ফেলানো ছিল তাতে ভিসির গাড়িই প্রথম বাধা প্রাপ্ত হয়। ডাকাতির ধারনা করা হলেও তাদের ল্যাপটপ না নেয়া বাড়তি সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। এতে উদ্দেশ্য প্রণদিতভাবে তার ওপর হামলা করে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ঠিক কি কারণে এ হামলা করা হয়েছে তা এখনো আড়াল রয়ে গেছে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইবি শিক্ষক সমিতি, জিয়া পরিষদ, গ্রীণ ফোরাম, শাপলা ফোরাম, শাখা ছাত্রদল, ইংরেজি বিভাগ ইবি সাংবাদিক সমিতি, প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অন্যান্য সংগঠন। তারা বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সরকারের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন। এর আগেও তার গাড়ির নাট খুলে তাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছিল। বছর না পেরুতে আবারো তাকে হত্যার পরিকল্পনায় হামলা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শৈলকুপা থানা ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি ডাকাতি বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা ইতমধ্যে তদন্তে নেমেছি। ঘটনার মূল কারণ উদঘাটন করতে চিরুনি অভিযান চলছে।’ প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুববর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি ইবিতে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে এটা হয়েছে তা বলা মুশকিল। তবে পূর্বের কোন ঘটনার মত এটাকে আমরা ধোয়াশায় রাখবো না।’
এব্যাপারে সকালে সাংবাদিকদের সাথে ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘হামলাকারীদের কি পরিকল্পনা ছিল তা আমার ধারণা নেই। তাদের কাউকেই চিনতে পারিনি। পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031