১০ হাজার টাকা মূল বেতন রেখে ন্যূনতম ১৬ হাজার টাকা বেতন নির্ধারনের দাবি জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলন দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় পোশাকশ্রমিকদের জন্য ।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ভবনে স্মারকলিপি দিয়ে এসব দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলন।
বিজিএমইএর কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংগহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখতার, জাতীয় পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাস্টার মোখলেছুর রহমান, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা জলি তালুকদারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল বিজিএমইএর সভাপতির বরাবরে এই স্মারকলিপি দেয়।
তাদের দাবির মধ্যে ছিল সোয়েটার শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে পিস রেট নির্ধারণ, ১৬ হাজার ৩০০ টাকা মজুরি, শ্রমিক ও শিল্প বাঁচাতে মজুরি বৃদ্ধি করা, শ্রমিকদের মাঝে চাল, ডাল, তেল শিশু খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করা, প্রতিবছর মূল মজুরির ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট, অংশিদারত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু ও ভেরিয়েবল ডিএ বা মহার্ঘ্যভাতা চালু করা।
স্মারকলিপি দেয়ার আগে সমাবেশে শ্রমিকনেত্রী তাসলিমা বলেন, মজুরি বোর্ড গঠন করা হলেও সেখানে প্রকৃত শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা হয়নি। ফলে এই বোর্ড শ্রমিকদের স্বার্থ কতটুকু রক্ষা করবে তা নিয়ে এখনই সংশয় দেখা দিয়েছে।
মজুরি বোর্ড গঠনের পর থেকে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক নেতাদের ওপর নজরদারি শুরু হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গাজীপুর, আশুলিয়ায়, সাভারে শ্রমিক সংগঠনগুলো কার্যালয়ে হানা দিচ্ছে পুলিশ।
মোশরেফা মিশু বলেন, পোশাক কারখানা মালিকরা জৌলশপূর্ণ জীবন যাপন করলেও শ্রমিকরা ন্যুনতম খাদ্যের অধিকারটুকু পাচ্ছেন না। মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বর্তমান বাজার মূল্যে কতজন মানুষের জীবন ধারণ সম্ভব সে কথাটি কেউ ভাবছে না।
চলতি মাসের ১৪ তারিখে পোশাক শ্রমিকদের জন্য চার সদস্যের মজুরি বোর্ডের ঘোষণা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। সেসময় তিনি বলেন, ‘আমাদের স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করা আছে। একজন জেলা জজের নেতৃত্বে চারজন স্থায়ী সদস্য আছেন। আর দুইজনকে নতুন করেন যুক্ত করা হল। স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। আর তিনজন সদস্য হলেন- মালিকপক্ষের প্রতিনিধি কাজী সাইফুদ্দীন আহমদ, শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি ফজলুল হক মন্টু, নিরপেক্ষ প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল উদ্দিন।
এদের বাইরে পোশাক শিল্প মালিকদের প্রতিনিধি হিসেবে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের নারী বিষয়ক সম্পাদিকা শামসুন্নাহার ভুঁইয়াকে শ্রমিকদের প্রতিনিধি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর। তিন হাজার টাকা মূল বেতন ধরে ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি ঠিক করা হয়েছিল তখন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন কাঠামোয় ওই বেতন পাচ্ছেন তারা।