আদালত শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) মো. মোতালেব হোসেনসহ তিনজনকে ঘুষ দুর্নীতির মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন । মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়ারুল ইসলাম আসামিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো অপর দুই আসামি হলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (প্রেষণে) উচ্চমান সহকারী নাসির উদ্দিন এবং লেকহেড গ্রামার স্কুলের পরিচালক খালেক হাসান মতিন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. ফিরোজ আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, আসামিরা খুবই প্রভাবশালী। তারা জামিনে মুক্তি পেলে মামলার সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে, চাপ সৃষ্টি করে এবং সাক্ষীদের যে কোনোভাবে প্রভাবিত করে মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের জামিন নামঞ্জুরের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের প্রার্থনা করেন। আসামি মোতালেব হোসেনের পক্ষে আইনজীবী গাজী শাহ আলম বলেন, মোতালেব কোনো অর্থ লেনদেনের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়। মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। হয়রানি করতে সন্দেহজনকভাবে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে পুলিশ রিমান্ড চাইত।
খালেক হাসান মতিনের পক্ষে সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজী বলেন, মামলাটি মহা ত্রুটিপূর্ণ। প্রসিকিউশনের মামলাটি আইনের দৃষ্টিতে দুর্বল। মিথ্যা অভিযোগে তাকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আর আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। আসামি অসুস্থ ব্যক্তি। তার চিকিৎসা চলছে। তাকে জামিন দিলে জামিনের অপব্যবহার করবেন না। তাই আমি তার জামিন চাইছি।
নাসির উদ্দিনের পক্ষে আইনজীবী কিবরিয়া হাসান বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি তার আসামি নিখোঁজ হন। বনানী থানায় একটা জিডি করা হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা আইন থাকলে তাকে হাজির করা হয়নি। তার তার জামিন চাইছি।
জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, জঙ্গি সম্পৃক্ততার কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দেয়ার বিষয়ে ঘুষ লেনদেন হয়েছে। আমি তাদের জামিনের বিরোধিতা করছি।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষামন্ত্রীর পিও মোতালেব হোসেন, মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ ও বিতরণ শাখার উচ্চমান সহকারী নাসিরউদ্দিন এবং লেকহেড গ্রামার স্কুলের পরিচালক খালেক হোসেন মতিনকে গত রবিবার সন্ধ্যার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে স্কুল খুলে দেওয়ার বিষয়ে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ঘুষের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।