চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে হলের সিট দখলকে কেন্দ্র করে । গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের সামনে সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের মধ্যে এমন ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ঝামেলায় জড়ানো সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা সাবেক উপ–গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু ও নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। অন্যদিকে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা সাবেক সহ–সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের (সাবেক মহিউদ্দিন গ্রুপ) অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শাহ আমানত হলের ২২০ নম্বর কক্ষের সিট নিয়ে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী শফিকুল ইসলাম শাওনের সাথে সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শাওনকে মারধর করে তারা। শাওন বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের ২০১৫–১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এর জেরে রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌছালে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে শাহ আমানত হলে ঢুকিয়ে দেয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট–পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি উভয়ের মাঝে অবস্থান নেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএফসি গ্রুপের নেতা ও সাবেক সহ–সভাপতি রেজাউল হক রুবেল আজাদীকে বলেন, ‘হঠাৎ করে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। নতুন কমিটির প্রক্রিয়ায় তারা অনেক পিছিয়ে আছে, তাই কমিটি যাতে না হয় সেজন্য তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’ সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীকে মারধরের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হলের কক্ষ নিয়ে একজনের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সেটাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সৃষ্টি।’
একই বিষয়ে অপর পক্ষের নেতা ও সাবেক উপ–গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু আজাদীকে বলেন, ‘আমাদের নেতার নির্দেশে আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাইনা। তারা বার বার বিনা উস্কানিতে বিভিন্ন ঝামেলার সৃষ্টি করে। এছাড়া ঝামেলা সমাধানে ওই পক্ষের দায়িত্বশীল কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়না। তারা একজন অপরজনের উপর দায় চাপিয়ে দেয়।’ তিনি বলেন, ‘সামনে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সে লক্ষ্যে ছেলেরা নিজেদেরকে সুসংগঠিত করছে। এ জায়গায় তারা হলের রুমে ঢুকে আমাদের কর্মীর উপর হামলা করে যদি কমিটি কেন্দ্রীক ঝামেলার কথাটি হাস্যকর।’
জানতে চাইলে চবি সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র আজাদীকে বলেন, ট্রেন আসার পর ছাত্রলীগের দু’পক্ষের দুই হলের সামনে অবস্থান নেয়। পরে বিশৃঙ্খল ও উত্ত্যক্ত পরিস্থিতি দেখে পুলিশ উভয় পক্ষকে দুই হলে প্রবেশ করিয়ে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’