সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে ছাত্রলীগের একপক্ষের ছুরিকাঘাতে অপর পক্ষের দুই ছাত্রলীগ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম । আজ রোববার দুপুরে কলেজ ক্যা¤পাসে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের একাদশ শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম ও আবির হোসেন। তারা বর্তমান চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক নুরুল আজিম রনির অনুসারি। প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়াল্টি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, দুপুরের শেষ দিকে আহত দুই ছাত্রকে তাদের সহপাঠীরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের হাতে ও উরুতে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য মায়মুন উদ্দিন মামুন এ ঘটনার জন্য যুবলীগ নেতা নুরুল মোস্তফা টিনুর অনুসারীদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, দেব পাহাড় এলাকায় টিনুর পক্ষের ছেলেরা কলেজে অন্য পক্ষে থাকা যাবে না বলে তাদের ছুরিকাঘাত করে।
মামুন জানান, দুপুরে একাদশ ১ম বর্ষের ছাত্র রাশেদুল ইসলাম ও আবির হোসেন দেব পাহাড় এলাকায় দোকানে নাস্তা করতে গেলে টিনু গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী অভিক ঈশান ও বহিরাগত কাপাসগোলা এলাকার শাহাদাৎ হোসেন রিফাত, জসিম উদ্দিন সুমন ১নং জয়নগর এলাকার পিয়াল দাশের নেতৃত্বে হামলা চালায়। এ সময় রাশেদ ও আবিরের মোবাইল ফোন ব্যাগ কেড়ে নিয়ে তাদের ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গত ৯ই জানুয়ারি ইউসুফ উদ্দিন খোকা নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে শিবির আখ্যা দিয়ে রনি গ্রুপের ছেলেরা পুলিশে সোপর্দ করলেও টিনুর গ্রুপের তদবীরে রাতে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে দু‘গ্রুপের বিরোধের জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, ইসলামী ছাত্র শিবিরের দখলে থাকা চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ২০১৫ সালের শেষ দিকে নিয়ন্ত্রণ নেয় ছাত্রলীগ। এরপর কিছুদিন একত্রিতভাবে সভা-সমাবেশ করলেও বর্তমানে কলেজ দুইটিতে ছাত্রলীগের রাজনীতি তিন ধারায় বিভক্ত। এর মধ্যে সাবেক মেয়র ও প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সমর্থিত গ্রুপ রয়েছে। নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারীদের নেতৃত্ব দেন নুরুল মোস্তফা টিনু। যার অনুসারীদের মধ্যে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও সরকারি হাজী মুহম্মদ মহসীন কলেজে প্রায় সংঘাত, সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রাম মহানগর চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল হুদা বলেন, দুই কলেজে ছাত্রলীগের তিন পক্ষ প্রায় সংঘাতে লিপ্ত হয়। এরপরও পুলিশ কলেজের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে। সংঘাত সংঘর্ষ হয় কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে। এ সমস্যা সমাধানে দলের শীর্ষ নেতাদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।