গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডি বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ধনী ও গরিবের মধ্যে বৈষম্য আরও বেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে । তাদের দাবি, গরিব পরিবারগুলোর আয় আগের তুলনায় কমছে।

শনিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন সিপিডির কর্তাব্যক্তিরা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা তুলে ধরতে এই আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।

সিপিডির গবেষণা মতে, ২০০৫ সালে সবচেয়ে গরিব পরিবারে খানাপ্রতি (একক বাড়িতে আয়) আয় ছিল

ছিল ১১০৯ টাকা। যা কমে ২০১৬ সালে তা কমে ৭৩৩ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে ধনী পাঁচ শতাংশের খানা প্রতি আয় ৩৮ হাজার ৭৯৫ থেকে ৮৮ হাজার ৯৪১ টাকা হয়েছে।

গবেষণা পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে প্রবৃদ্ধির সুফল পৌঁছায়নি। গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে।’

সিপিডির দাবি, ২০১৬ সালে দেশের মানুষের মোট আয়ের ০.২৩ শতাংশ আসে সবচেয়ে দরিদ্রদের পাঁচ শতাংশ থেকে, যা ২০১০ সালে ছিল ০.৭৪ শতাংশ।

অন্যদিকে ২০১৬ সালে মোট আয়ে সবচেয়ে ধনী পাঁচ শতাংশের অবদান ২৭.৮৯ শতাংশ, যা ২০১০ সালে ছিল ২৪.৬১ শতাংশ।

এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৭ সাল শুরু হলেও শেষের দিকে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ বাড়েনি। প্রবৃদ্ধি হলেও দারিদ্র্য বিমোচনের হার কমেছে। ফলে আয় ও সম্পদ বৈষম্য বেড়েছে।’

দেবপ্রিয় জানান, প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মসংস্থান বাড়েনি। এর ফলে দারিদ্র্য বিমোচনের হার কমেছে, বেড়েছে অর্থনৈতিক বৈষম্য।

দেবপ্রিয় জানান, ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে দারিদ্র্য হ্রাসের হার ছিল ১.৮ শতাংশ, ২০১০ থেকে ২০১৬ সালে তা হয়েছে ১.২ শতাংশ। একই ভাবে নতুন চাকরি বৃদ্ধির হার ৩.৩ থেকে কমে হয়েছে ১.৯ শতাংশ।

বৈষম্য কমাতে না পারলে ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি অর্জন চ্যালেঞ্জের ‍মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কার কথা বলেন দেবপ্রিয়।

এর আগে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, দেশে আমদানি ব্যয় অনেক বেড়েছে। কিন্তু রপ্তানি আয় সেই হারে বাড়েনি। ফলে ব্যালান্স অব পেমেন্টে ঘাটতি হচ্ছে। টাকার মান কমেছে।

সার্বিকভাবে সুদ হার কমলেও দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এই সুবিধা পাননি বলেও দাবি ককরেন তৌফিক।

২০১৭ সালকে ব্যাংক কেলেঙ্কারির বছর বলেও আখ্যা দেয়া হয় এই সংবাদ সম্মেলনে। বলা হয়, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরত না দেয়ার প্রবণতা বা খেলাপি ঋণও অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ার একটি কারণ।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031