ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভা চলাকালে ছাত্রলীগের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘষের্র ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। সংঘর্ষে হাতাহাতি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তারা এক অপরের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ শটগান থেকে ৬ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে। আজ শনিবার সকালে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এতে ছাত্রদলের পূর্ব ঘোষিত প্রতিষ্ঠাবর্ষিকীর অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে গেছে।
সংঘর্ষে ৫ পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রদল দাবি করেছে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে ছাত্রলীগ পরিকল্পিত হামলা করে তাদের অনুষ্ঠান পন্ড করে দিয়েছে ও তাদের অন্তত অর্ধশত নেতমাকর্মী আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, পুলিশের এসআই মমিনুল হক (৪৫), কনষ্টেবল আজাদ (৫২), রিপন মিয়া (২৪), রিয়াজ (৩০), রূপম (৪৫) ছাত্রদলের ওসমান (৩৫) ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। গুরুতর আহত আসিফ (১৪)কে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সামনে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমানত হোসেন গাজীর ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করে উপজেলা ছাত্রদল। সকাল ৯টা হতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের কয়েক শত নেতা কর্মী মিছিলসহ দলে দলে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে উপস্থিত হয়। সকাল সাড়ে ১০ টায় শুরু হয় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি সাবেক এমপি লায়ন হারুনুর রশিদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফ মোঃ ইউনুছ, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান দুলাল ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমানত হোসেন গাজী।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলোচনা সভা শুরুর পর ১১টা নাগাদ উপজেলা ছাত্রলীগের একটি মিছিল সভাস্থলের সম্মুখ দিয়ে ফরিদগঞ্জ বাজারের দিকে যাচ্ছিলো। এ সময় কেরোয়া এলাকা থেকে ছাত্রদলের একটি মিছিল সভাস্থলে যাওয়ার সময় মুখোমুখি হয়। এতে দু’গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংর্ঘষ সৃষ্টি হয়। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয় ও একে অপরের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনাও ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। ঘটনাস্থলে পূর্ব হতে উপস্থিত থাকা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে নিতে শটগান থেকে ৬ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। খবর পেয়ে এসি (ল্যান্ড) মো: ইয়াছিন হোসেন (ইউএনও’র ভারপ্রাপ্ত), উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান রানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সংঘর্ষের ফলে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করেনি।
এদিকে, উপজেলা ছাত্রদলের সি. যুগ্ম আহবায়ক ফজলুর রহমান জানান, প্রশাসনকে জানিয়ে পূর্ব ঘোষিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু ছাত্রলীগ পরিকল্পীতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের আলোচনা সভায় হামলা করে। এতে ছাত্রদলের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
অন্যদিকে, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব আলম সোহাগ জানান, বিএনপি জামায়াত জোটের ধ্বংসাত্মক ও জ¦ালাও পোড়াও রাজনীতির প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। ছাত্রদল আমাদের বিক্ষোভ মিছিলে অহেতুক ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোঃ শাহ আলম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে। এসময় ৫জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় ফরিদগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে সূত্রে জানা গেছে।