navanaএলার্ট নিউজ প্রতিনিধি চট্টগ্রাম: জেলার একজন  ক্ষমতাধর ব্যক্তি শুধুমাত্র একটি সিএনজি স্টেশন থেকেই সাড়ে ১৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।  গত ৬ বছরে তার মালিকানাধীন ভ্রাম্যমান সিএনজি ষ্টেশন থেকে অবৈধভাবে তিনি ওই আয় করেছেন। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে সিএনজি গ্যাসের  দাম বাড়তি নিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ওই টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, জেলার ক্ষমতাধর ওই ব্যক্তি ২০০৯ সালের মধ্যভাগে কক্সবাজার সদর উপজেলার বাসটার্মিনাল সংলগ্ন লারপাড়ার একটি ভ্রাম্যমান সিএনজি পাম্প স্থাপন করেন। ওটি জেলার একমাত্র সিএনজি ষ্টেশন। আর ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সেই থেকে তিনি প্রতি ঘনফুট গ্যাসে ৮ টাকা করে বাড়তি নিচ্ছেন। এভাবে প্রতিদিন তিনি অতিরিক্ত ৮০ হাজার টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন। বছরে এভাবে প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ঠরা অবৈধভাবে আয় করেন ২ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। ৬ বছরে এভাবেই ষ্টেশনটির মালিকপক্ষ ভোক্তাদের পকেট থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন অতিরিক্ত ১৭ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা।
হাজী সরওয়ার সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনটি ও ক্ষমতাধর ব্যক্তির মালিকানাধীন ভ্রাম্যমান ফিলিং ষ্টেশন। লারপাড়া মোক্তার আহমেদ বদ্দারের কাছ থেকে ফিলিং ষ্টেশনের জন্য জমি  ভাড়া নেওয়া হলেও এটি সরকারি জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছ্ ে। ষ্টেশনটি করার সময় কক্সবাজার সিএনজি বিক্রির জন্য প্রতি ঘনফুট ৩৭ টাকা নির্ধারন করা হয়। কিন্তু শুরু থেকেই লারপাড়ার গ্যাস পাম্পে প্রতি ঘনফুটের মূল্য নেওয়া হত ৪৫ টাকা। আর গত বছরের শেষ দিকে সরকার এর মূল্য ৪২ টাকা নির্ধারন করে দিলেও গ্যাস পাম্প কর্তৃপক্ষ এর মূল্য নিচ্ছেন সাড়ে ৫০ টাকা। অর্থাৎ ষ্টেশনটির যাত্রা লগ্ন থেকেই ভোক্তাদের কাছ থেকে ৮ টাকা হারে বেশী নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। যার ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রয়েছে।
এ বিষয়ে মাইক্রোবাস চালক হেলাল জানান, চট্টগ্রাম শহরের সিএনজি পাম্পে প্রতি ঘনফুটে মূল্য রাখা হয় ৩৫ টাকা । তার বিপরীতে কক্সবাজারের সিএনজি পাম্পটিতে মূল্য নেওয়া হয় সাড়ে ৫০ টাকা।
এ বিষয়ে হাজী সরওয়ার সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনের ম্যানেজার রমজান জানান, ওই ষ্টেশন থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার ঘনফুট সিএনজি বিক্রি করা হয়। বর্তমানে প্রতি ঘনফুট গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে সাড়ে ৫০ টাকায়। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্য কত তিনি জানেননা।
চট্টগ্রাম পেট্রোলিয়াম করপোরেশন  সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলার একমাত্র ফিলিং ষ্টেশনটি ডটার ফিলিং ষ্টেশন  অর্থাৎ ভ্রাম্যমান ফিলিং ষ্টেশন। এ কারণে যাতায়াত খরচ বাবদ তাদেরকে চট্টগ্রামের বিক্রয়মূল্যের চেয়ে ৭ টাকা বাড়তি দামে বিক্রয় করার সুযোগ দেওয়া হয়। সেই মতে বর্তমানে চট্্রগ্রামে প্রতি ঘনফুট গ্যাসের দাম ৩৫ টাকা । তাহলেও ওই ফিলিং ষ্টেশনে গ্যাসের দাম হয় ৪২ টাকা। কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে সাড়ে ৫০ টাকায়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ষ্টেশন চালু করার আগ থেকে নাভানার সাথে চুক্তি করেন ক্ষমতাধর ওই ব্যক্তি। চুক্তি অনুযায়ী ষ্টেশনটি দেখভাল ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই কোম্পানিকে।
চুক্তির বিষয়টি স্বীকার করে নাভানা ম্যানেজার হানিফ জানান, প্রতিষ্ঠানটি নাভানা পরিচালনা করেন ঠিকই। কিন্তু সব নির্দেশনা প্রদান করেন সিএনজি পাম্পের মালিক। কাজেই বাড়তি দামের বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না।
এ বিষয়ে হাজী সরওয়ার সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনের মালিক ওই ক্ষমতাধর ব্যক্তির সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ওই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সর্বশেষ তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফিলিং ষ্টেশনের ব্যাপারে আধঘন্টা পরে বলবেন জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কিন্তু পরে আর ফোন রিসিভ করেননি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, বাড়তি দামে গ্যাস বিক্রির বিষয়টি তিনি জানতেন না। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031