ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে ‘সহনশীল’ মাত্রায় ঘুষ গ্রহণের পরামর্শ প্রদান ও ঘুষ গ্রহণে বাধা দেয়ার সাহস নেই বলে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে । একজন মন্ত্রী নিজেকে দুর্নীতিগ্রস্থ হিসেবে ঘোষণা দেয়া সাহসিকতার পরিচায়ক হতে পারে; তবে একই সঙ্গে এই সৎসাহসের যথার্থতার স্বার্থেই নৈতিক অবস্থান থেকে তিনি পদত্যাগ করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন- এই প্রত্যাশা করছে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর এ বক্তব্য যেমন জাতির জন্য উদ্বেগজনক, তেমনি এতে কেবল তার নিজের বিভ্রান্তি ও হতাশার প্রতিফলন ঘটেছে। মন্ত্রীর বক্তব্যে এটাও পরিষ্কার যে ইতিপূর্বে শিক্ষা খাতে টিআইবি’র একাধিক গবেষণায় উঠে আসা ব্যাপক মাত্রার দুর্নীতির চিত্র ও বিশ্লেষণকে তিনি শুধু ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার ও উপেক্ষাই করেননি, বরং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়েছেন, যার ফলে তাকে এখন নিজেকে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের হাতে জিম্মি ভাবতে হচ্ছে। তার যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সৎসাহস ও দৃঢ়তা থাকত তাহলে এরূপ অসহায়ত্বের মাধ্যমে দুর্নীতির আরো বিস্তার ঘটানোর প্রেসক্রিপশন দেয়ার প্রয়োজন ছিল না। সেক্ষেত্রে তিনি তাঁর দাবি অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য-সহনশীলতার কার্যকর প্রয়োগ করতে পারতেন।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, সকল সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রীদের যেভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ হিসেবে আখ্যায়িত করার অপচেষ্টা শিক্ষামন্ত্রী করেছেন তা অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য। প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী কর্তৃক মন্ত্রীপরিষদের সকল সহকর্মীসহ নিজেকে চোর সম্বোধন জনমনে সরকার সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণার অবতারণা করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ ও অন্যান্য উন্নয়নমূলক ভবিষ্যত রূপরেখায় সব ধরণের ঘুষ লেনদেন ও দুর্নীতি নির্মূলের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতি-বদ্ধ এবং ইতিমধ্যেই লক্ষ্য পূরণে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এমন সময়ে জাতির ভবিষ্যত বিনির্মাণে নিবেদিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মত সংবেদনশীল একটি মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ ধরণের বক্তব্য কোন অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নয়।