একাংশ বেতন কাঠামোয় বৈষম্য অবসানের দাবিতে তিন দিনের অনশন গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ভাঙানোর পরও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ।
সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী। সেখানে তিনি পানি ও ফলের রস খাইয়ে শিক্ষাকদের অনশন ভাঙান।
এর আগে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সোমবার দুপুরে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিতের কথা জানানো হয়।
তবে মন্ত্রীর আশ্বাসের ভরসা পাচ্ছেন না সাধারণ শিক্ষকরা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ছাড়া মাঠ ছাড়বেন না তারা।
শিক্ষকদের ভাষ্য, চার বছর আগে থেকেই এ ধরনের আশ্বাস দেয়া হচ্ছে। এখন আর আশ্বাস নয়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা চান তারা।
মন্ত্রী ও শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণাকে তারা বর্জন করে শিক্ষক নেতারা বলেন, আন্দোলন ততদিন পর্যন্ত চলবে যতদিন না প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা না দেবেন।
ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিনিধি সৈয়দ অদিত জানিয়েছেন, মন্ত্রী ও শিক্ষক নেতাদের অনুরোধে সাধারণ শিক্ষকরা অনশন ভাঙলেও তারা এখনো শহীদ মিনারেই অবস্থান করছেন। তবে শিক্ষক নেতাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এর আগে বাংলাদেশ প্রাথমিক সরকারি শিক্ষক মহাজোটের নেতা মো. শামসুদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা অনশন কর্মসূচি স্থগিত করলাম। আমরা মন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলোচনা চালিয়ে যাব।’
আশুগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠ ছাড়ব না। পলাশীর প্রান্তে জেভাবে সিরাজ উদ্দৌলা পরাজিত হয়েছেন, ঠিক সেই ভাবেই আমরা আজকে কিছু দালাল নেতাদের কাছে আমরা পরাজিত হয়েছি। শিক্ষক নেতারা দালালি করছে। তারা সকল শিক্ষকের সাথে বেইমানি করেছেন। তারা সরকারের দালালি করে আমাদের একা ফেলে রেখে চলে গেছেন। তারা স্রেফ দালাল।’
বেতন বৈষম্য’নিরসনের দাবিতে গত শনিবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘আমরণ’ অনশন পালন শুরু করেন প্রাথমিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা। কর্মসূচিতে অংশ নেয়া দশজন শিক্ষক রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সোমবারও বেশ কয়েকজন শিক্ষকের অসুস্থ হয়েছেন।
শিক্ষকরা জানান, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে বেতন পেতেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)।
এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে বেতন চান সহকারী শিক্ষকরা।