ওয়াশিংটন জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তার পরিষদে আনা খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে । খবর আল-জাজিরা ও রয়টার্সের।
গতকাল সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্য রাষ্ট্রই এ প্রস্তাবে ভোট দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে ১৪ রাষ্ট্রের প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়।
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতি দেয়ার বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করে মিশর। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, জেরুজালেমের মর্যাদা প্রসঙ্গে যেকোন সিদ্ধান্তের কোন আইনি ভিত্তি নেই। এ সিদ্ধান্ত অকার্যকর এবং একে প্রতিহত করতে হবে।
ট্রাম্পের ঘোষণার বিরোধিতা থেকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলেও এতে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে জেরুজালেমের অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, প্রস্তাবে সেগুলোর ‘তীব্র নিন্দা’ জানানো হয়।
এমন প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, সেটাও আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল। নিয়ম অনুযায়ী নিরপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে যেকোনো একটি রাষ্ট্র যদি কোনো প্রস্তাবে ভেটো দেয়, তাহলে সেই প্রস্তাব বাদ পড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য চার স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হলো- রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।
ভোটাভুটিতে এই প্রস্তাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন স্থায়ী প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালি বলেন, ‘আজ নিরাপত্তা পরিষদে যা দেখলাম, তা স্পষ্টতই অপমান। আমরা এটা ভুলে যাবো না।’ তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে জাতিসংঘ যে ভালোর চেয়ে খারাপটাই বেশি করছে, এটা তারই আরেকটি প্রমাণ।’
ইহুদিদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক মাতৃভূমি হিসেবে জেরুজালেম ছাড়া তাদের অন্য কোনো রাজধানী কখনোই ছিল না বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন প্রতিনিধি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোয় প্রস্তাব নাকচ হওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একজন মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণকে অগ্রহণযোগ্য ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও গত ৬ ডিসেম্বর ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলমানদের পবিত্র স্থান জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন এবং মার্কিন দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানান। এরপরই বিশ্ব মুসলমানরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এমনকী বিক্ষোভ হয় যুক্তরাষ্ট্রেও।