ফরহাদ মজহার অবশেষে মুখ খুললেন। ১৫৯ দিন পর বললেন, তাকে অপহরণের উদ্দেশে তুলে নেয়া হয়েছিল। আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাপ দিয়ে তার কাছ থেকে এটা আদায় করা হয়েছিল। সন্ধ্যায় তার শ্যামলীস্থ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ মজহার বলেন, আমাকে উদ্ধারে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু পরে ঘটনা আড়াল করার জন্য তাদের সাফল্যকে ম্লান করে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ মজহার বলেন, ডিবি অফিস থেকে লিখিত কপি দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে তাকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালতে জবানবন্দি না দিয়ে ওই কাগজ উপস্থাপন করে আদালতকে বলেছিলেন ‘ডিবি অফিস আমাকে দিয়ে যা লিখিয়ে নিয়েছে আমি তাই আপনাকে দিচ্ছি’। সংবাদ সম্মেলনে ‘অপহরণের’র পরের ঘটনা ও মামলার বিষয় তুলে ধরেন ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেয়ার কথা জানান ফরহাদ মজহার।
লিখিত বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, গত ৩রা জুলাই ২০১৭ আমি ভোরে কম্পিউটারে লিখতে গিয়ে দেখি আমি চোখ খুলতে পারছি না, শুকনা। লেখা কিছুই পড়তে বা লিখতে পারছি না। সব আবছা দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থা হলে ওষুধ কেনার জন্য একটি চব্বিশ ঘণ্টা খোলা ফার্মেসিতে ওষুধ কেনার জন্য নামি। এ সময় তিনজন লোক আমাকে ঘিরে একটি সাদা মাইক্রোবাসে জোর করে তুলেই আমার চোখ বন্ধ করে ফেলে। সেই সময় ফোন আমার হাতে স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ডায়াল করা অবস্থায় থাকায় প্রথম ফোন আমি ভাগ্যক্রমে আমার স্ত্রীকে করতে পারি। এরপর বাঁচার জন্য টেলিফোন করা, টাকা পাঠানোসহ অপহরণকারীরা যা কিছু করতে বলে আমি তা করি। যেখানে তারা আমাকে ছেড়ে দেয় আমি তা চিনি না। আমি বুঝতে পারি তারা আমার ওপর নজরদারি জারি রেখেছে এবং তাদের নির্দেশ মতো সন্ধ্যায় হানিফ পরিবহনের গাড়িতে উঠলে গাড়িতে তারা আমাকে বাসের পেছনে বসিয়ে দেয়। আমি মৃত্যুভয়ে ভীত, বিধ্বস্ত ও শারীরিক অসুস্থতায় নির্জীব হয়ে পড়ি। সোরগোল শুনে আমি জেগে উঠি, কিছু সাদা পোশাকের লোক জোর করে আমাকে আবার নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। আমাকে আবার মারবার জন্য নামানো হচ্ছে ভেবে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি, কিন্তু সাদা পোশাকের কিছু ব্যক্তি র্যাবের দিকে বন্দুক তুলে শাসিয়ে আমাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করলে উভয়ের মধ্যে প্রচণ্ড বচসা এবং তর্কাতর্কি হয়। কিন্তু র্যাব রীতিমতো ছোটখাটো যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে আমাকে তাদের গাড়িতে ওঠায় এবং আমার স্ত্রী ফরিদা আখতারের সঙ্গে কথা বলিয়ে আমাকে আস্বস্ত করে। কিন্তু সাদা পোশাকের লোকগুলো র্যাবের গাড়ি থেকে আমাকে বারবার জোর করে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, র্যাব আমাকে নিয়ে খুলনায় নিয়ে আমার চিকিৎসা ও বিশ্রামের পাশাপাশি তদন্ত করতে চাইলেও কে বা কারা র্যাবের গাড়ির দুই দিকে রাস্তায় রাতের ট্রাক থামিয়ে দুই দিকে পথ রোধ করে এবং র্যাবের গাড়িসহ আমাকে একটি জায়গায় নিয়ে আসে। পরে বলা হয় এটা অভয়নগর থানা। আমি গুমের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে জোর করে র্যাবের গাড়ি থেকে নামানো হয়, আমার সঙ্গে তারা প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের নামে আমাকে বলতে বাধ্য করা হয় যে আমি ‘বিনোদন’-এর জন্য বেরিয়েছি এবং তাদের কাছে ভিডিওসহ অন্যান্য প্রমাণ আছে। আমি প্রচ- অসুস্থ এবং অবিলম্বে চিকিৎসা দরকার বলা সত্ত্বেও তারা আমাকে ক্যামেরাসহ কিছু লোকের সামনে দাঁড় করায়, সাংবাদিকদের সামনে আমি বিনোদনের জন্য স্বেচ্ছায় বেরিয়েছি বলে স্বীকার করবার জন্য প্রচ- চাপ দেয়, অনেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে পুলিশের একটি গাড়িতে নিয়ে আমাকে উচ্চস্বরে গান গাইতে গাইতে পুলিশ ঢাকার পথে রওয়ানা হয়। সারা পথে নানানভাবে আমি মানসিক নির্যাতন ভোগ করি।
তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অবস্থায় আমাকে ঢাকায় আদাবর থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং বারবার বলা সত্ত্বেও আমাকে আমার পরিবারের কাছে যেতে দেয়া হয় না। বহুক্ষণ থানায় বসিয়ে রেখে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবি অফিসে হতভম্ব, ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত অবস্থায় আমাকে জেরা ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবার জন্য একটি লিখিত কপি দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। আমি মাননীয় আদালতকে প্রচ- বিভ্রান্ত অবস্থায় এইটুকুই শুধু বলতে পারি যে-আমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, আমার ভীতি ও ট্রমা এখনো কাটেনি, ডিবি অফিস আমাকে দিয়ে যা লিখিয়ে নিয়েছে আমি তাই আপনাকে দিচ্ছি। এরপর তার সদয় অনুমতি নিয়ে তার কক্ষের একটি সোফায় এলিয়ে পড়ি।
তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাকে অন্যদিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। তদন্ত শেষ হবার আগেই পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা প্রেস কনফারেন্স করে আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন এবং পুলিশের প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জ করলে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেন। এতে পুলিশের ভূীমকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। অপহৃত অবস্থায় আমাকে যেসব কাজ করতে বাধ্য করা হয় এবং পুলিশের বয়ানে সঙ্গতি ফুটে ওঠে।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১৮ তারিখে ডিবি পুলিশ আবার আমাদের তাদের অফিসে ডেকে নেয়। কিন্তু সেখানেও সুষ্ঠু তদন্তের পরিবর্তে পুলিশের প্রতিবেদনে সায় না দিলে আমাদের আরও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে পুলিশ হুমকি দিতে থাকে। এতে আমরা আরও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকি। আইনী প্রক্রিয়ার স্বার্থে গোয়েন্দা পুলিশ যে প্রতিবেদনই দিক তাকে আইনীভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়ে সত্য মিথ্যার মীমাংসা আদালতে হবে আশা করে আমরা চুপ থাকি।
ফরহাদ মজহার বলেন, গুমের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার পাওয়ার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনরি বিভিœন ক্ষেত্রে যারা অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন, ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা তাদের সাফল্য ও গৌরবকে মারাত্মকভাবে ম্লান করে দেয়া হলো। গুম ও মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি উন্নত করার এবং কৃতিত্বের গৌরব দাবির পরিবর্তে এটাই প্রমাণ করবার চেষ্টা হচ্ছে যে যারা গুম হয়েছেন এবং এখনও হচ্ছেন তারা তাদের নিজের কারণেই নিখোঁজ হয়েছেন। আন্তর্জাতিক দায় এড়ানের এই চেষ্টা ভয়ংকর। আমি জীবিত ফিরে আসায় আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা করে আমার মুখ বন্ধ করে দেয়ার এই চেষ্টা ঘৃন্য ও জগণ্য। আমি সারা জীবন মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেছি। বাংলাদেশের গুমের এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে সকল মান অপমান সহ্য করে হলেও এ যাবৎ গুম হয়ে যাওয়া মানুষগুলো যেন তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারেন সেই চেষ্টা আমাদের সকলকেই করতে হবে। এই দায় সরকারকে নিতে হবে। এই দাবি জানাতেই আমি আজ কথা বলছি। আদালতে জমা দেয়া পুলিশের তদন্ত প্রদিবেদনের বিষয়ে নারাজি দেয়ার কথাও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ মজহারের আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেজবাহসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, গত ৩রা জুলাই ২০১৭ আমি ভোরে কম্পিউটারে লিখতে গিয়ে দেখি আমি চোখ খুলতে পারছি না, শুকনা। লেখা কিছুই পড়তে বা লিখতে পারছি না। সব আবছা দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থা হলে ওষুধ কেনার জন্য একটি চব্বিশ ঘণ্টা খোলা ফার্মেসিতে ওষুধ কেনার জন্য নামি। এ সময় তিনজন লোক আমাকে ঘিরে একটি সাদা মাইক্রোবাসে জোর করে তুলেই আমার চোখ বন্ধ করে ফেলে। সেই সময় ফোন আমার হাতে স্ত্রী ফরিদা আখতারকে ডায়াল করা অবস্থায় থাকায় প্রথম ফোন আমি ভাগ্যক্রমে আমার স্ত্রীকে করতে পারি। এরপর বাঁচার জন্য টেলিফোন করা, টাকা পাঠানোসহ অপহরণকারীরা যা কিছু করতে বলে আমি তা করি। যেখানে তারা আমাকে ছেড়ে দেয় আমি তা চিনি না। আমি বুঝতে পারি তারা আমার ওপর নজরদারি জারি রেখেছে এবং তাদের নির্দেশ মতো সন্ধ্যায় হানিফ পরিবহনের গাড়িতে উঠলে গাড়িতে তারা আমাকে বাসের পেছনে বসিয়ে দেয়। আমি মৃত্যুভয়ে ভীত, বিধ্বস্ত ও শারীরিক অসুস্থতায় নির্জীব হয়ে পড়ি। সোরগোল শুনে আমি জেগে উঠি, কিছু সাদা পোশাকের লোক জোর করে আমাকে আবার নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। আমাকে আবার মারবার জন্য নামানো হচ্ছে ভেবে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি, কিন্তু সাদা পোশাকের কিছু ব্যক্তি র্যাবের দিকে বন্দুক তুলে শাসিয়ে আমাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করলে উভয়ের মধ্যে প্রচণ্ড বচসা এবং তর্কাতর্কি হয়। কিন্তু র্যাব রীতিমতো ছোটখাটো যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে আমাকে তাদের গাড়িতে ওঠায় এবং আমার স্ত্রী ফরিদা আখতারের সঙ্গে কথা বলিয়ে আমাকে আস্বস্ত করে। কিন্তু সাদা পোশাকের লোকগুলো র্যাবের গাড়ি থেকে আমাকে বারবার জোর করে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, র্যাব আমাকে নিয়ে খুলনায় নিয়ে আমার চিকিৎসা ও বিশ্রামের পাশাপাশি তদন্ত করতে চাইলেও কে বা কারা র্যাবের গাড়ির দুই দিকে রাস্তায় রাতের ট্রাক থামিয়ে দুই দিকে পথ রোধ করে এবং র্যাবের গাড়িসহ আমাকে একটি জায়গায় নিয়ে আসে। পরে বলা হয় এটা অভয়নগর থানা। আমি গুমের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে জোর করে র্যাবের গাড়ি থেকে নামানো হয়, আমার সঙ্গে তারা প্রচণ্ড দুর্ব্যবহার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের নামে আমাকে বলতে বাধ্য করা হয় যে আমি ‘বিনোদন’-এর জন্য বেরিয়েছি এবং তাদের কাছে ভিডিওসহ অন্যান্য প্রমাণ আছে। আমি প্রচ- অসুস্থ এবং অবিলম্বে চিকিৎসা দরকার বলা সত্ত্বেও তারা আমাকে ক্যামেরাসহ কিছু লোকের সামনে দাঁড় করায়, সাংবাদিকদের সামনে আমি বিনোদনের জন্য স্বেচ্ছায় বেরিয়েছি বলে স্বীকার করবার জন্য প্রচ- চাপ দেয়, অনেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে পুলিশের একটি গাড়িতে নিয়ে আমাকে উচ্চস্বরে গান গাইতে গাইতে পুলিশ ঢাকার পথে রওয়ানা হয়। সারা পথে নানানভাবে আমি মানসিক নির্যাতন ভোগ করি।
তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অবস্থায় আমাকে ঢাকায় আদাবর থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং বারবার বলা সত্ত্বেও আমাকে আমার পরিবারের কাছে যেতে দেয়া হয় না। বহুক্ষণ থানায় বসিয়ে রেখে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবি অফিসে হতভম্ব, ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত অবস্থায় আমাকে জেরা ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবার জন্য একটি লিখিত কপি দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়। আমি মাননীয় আদালতকে প্রচ- বিভ্রান্ত অবস্থায় এইটুকুই শুধু বলতে পারি যে-আমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, আমার ভীতি ও ট্রমা এখনো কাটেনি, ডিবি অফিস আমাকে দিয়ে যা লিখিয়ে নিয়েছে আমি তাই আপনাকে দিচ্ছি। এরপর তার সদয় অনুমতি নিয়ে তার কক্ষের একটি সোফায় এলিয়ে পড়ি।
তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাকে অন্যদিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। তদন্ত শেষ হবার আগেই পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা প্রেস কনফারেন্স করে আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন এবং পুলিশের প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জ করলে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেন। এতে পুলিশের ভূীমকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। অপহৃত অবস্থায় আমাকে যেসব কাজ করতে বাধ্য করা হয় এবং পুলিশের বয়ানে সঙ্গতি ফুটে ওঠে।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১৮ তারিখে ডিবি পুলিশ আবার আমাদের তাদের অফিসে ডেকে নেয়। কিন্তু সেখানেও সুষ্ঠু তদন্তের পরিবর্তে পুলিশের প্রতিবেদনে সায় না দিলে আমাদের আরও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে পুলিশ হুমকি দিতে থাকে। এতে আমরা আরও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকি। আইনী প্রক্রিয়ার স্বার্থে গোয়েন্দা পুলিশ যে প্রতিবেদনই দিক তাকে আইনীভাবে মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়ে সত্য মিথ্যার মীমাংসা আদালতে হবে আশা করে আমরা চুপ থাকি।
ফরহাদ মজহার বলেন, গুমের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার পাওয়ার ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনরি বিভিœন ক্ষেত্রে যারা অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন, ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা তাদের সাফল্য ও গৌরবকে মারাত্মকভাবে ম্লান করে দেয়া হলো। গুম ও মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি উন্নত করার এবং কৃতিত্বের গৌরব দাবির পরিবর্তে এটাই প্রমাণ করবার চেষ্টা হচ্ছে যে যারা গুম হয়েছেন এবং এখনও হচ্ছেন তারা তাদের নিজের কারণেই নিখোঁজ হয়েছেন। আন্তর্জাতিক দায় এড়ানের এই চেষ্টা ভয়ংকর। আমি জীবিত ফিরে আসায় আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা করে আমার মুখ বন্ধ করে দেয়ার এই চেষ্টা ঘৃন্য ও জগণ্য। আমি সারা জীবন মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেছি। বাংলাদেশের গুমের এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে সকল মান অপমান সহ্য করে হলেও এ যাবৎ গুম হয়ে যাওয়া মানুষগুলো যেন তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারেন সেই চেষ্টা আমাদের সকলকেই করতে হবে। এই দায় সরকারকে নিতে হবে। এই দাবি জানাতেই আমি আজ কথা বলছি। আদালতে জমা দেয়া পুলিশের তদন্ত প্রদিবেদনের বিষয়ে নারাজি দেয়ার কথাও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ মজহারের আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেজবাহসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।