আগাম নির্বাচন হঠাৎ করেই আলোচনায় এসেছে । সূত্রপাত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার মাধ্যমে। এখন এ
আলোচনায় যোগ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের শেষ অথবা ২০১৯ সালের শুরুতে হবে আগামী সংসদ নির্বাচন। সংসদ বহাল রেখে অথবা ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা রয়েছে বর্তমান সংবিধানে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চাইলে নির্ধারিত সময়ের আগেও সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারেন।

 বুধবার নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিইসি যথার্থই বলেন, বিষয়টি সরকারের এখতিয়ার। তবে সরকার চাইলে নির্বাচন কমিশন পারবে।
গতকাল একই প্রশ্নে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের বিষয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার, তিনিতো বলেন নাই কবে নির্বাচন হবে। আমরা ধরে রাখছি সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু এখন যদি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন তিনি আগাম নির্বাচন দেবেন, সেটা তার এখতিয়ার। এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা হয় নাই। তবে নির্বাচনের জন্য আমরা সবসময়ই প্রস্তুত আছি, নির্বাচন যদি আগামী মাসেও হয় আওয়ামী লীগ প্রস্তুত।
অন্যদিকে, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ পরিবেশ সরকার নিশ্চিত করলে বিএনপি আগাম নির্বাচনেও যেতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মওদুদ আহমদ। নির্বাচন কমিশন আগাম নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো সময়ে নির্বাচন হলে অংশগ্রহণে বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে। তবে তা অবশ্যই নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হতে হবে।
নির্বাচনে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ
জাতীয় নির্বাচন আগামী মাসে হলেও আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনের বিষয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি তো বলেন নাই কবে নির্বাচন হবে। আমরা ধরে রাখছি নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে। কিন্তু এখন যদি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন তিনি আগাম নির্বাচন দেবেন সেটা তার এখতিয়ার। এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা হয় নাই। তবে নির্বাচনের জন্য আমরা সব সময়ই প্রস্তুত আছি। গতকাল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে যৌথসভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো প্রস্তুতি নেবো আগামী মাসে নির্বাচন হলে কিভাবে জিততে পারি। যদি নির্বাচন আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে হয়, তাহলে আমাদের সাংগঠনিক প্রস্তুতি থাকবে না? তিনি বলেন, আমরা আগামীবার ক্ষমতায় আসবো কি আসবো না, সেটা নির্ধারণ করবেন আল্লাহ ও এ দেশের জনগণ। আমরা কাউকে ২০ সিটও দেবো না, ৩০ সিটও দেবো না কিংবা ৪০ সিটও দেবো না। এটা বিএনপি বলে থাকে। আমরা শুধু বলছি, বিজয়ের ব্যাপারে আমাদের আত্মবিশ্বাস রয়েছে। কারণ আমাদের উন্নয়ন ও অর্জন আছে। দেশের জনগণ শেখ হাসিনার সততা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও উন্নয়নকে বেশি গুরুত্ব দেয় এবং দেশের অগ্রযাত্রায় তার ওপর আস্থাশীল। এ সরকার আবারও ক্ষমতায় আসা উচিত বলে জল্পনা-কল্পনা করছে জনগণ। বিএনপির দেখানোর মতো দর্শনীয় ইতিবাচক রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড নেই। এ পরিস্থিতিতে তারা আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক অনেক পিছিয়ে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বারবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালত ও আইন সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না। কোনো থানায় অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট না এলে পুলিশ তাদের কিভাবে গ্রেপ্তার করবে? অতীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি কয়েকবার বলেছেন তার অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট থানায় আসে নাই। খালেদা জিয়াকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না আদালতকে জিজ্ঞাসা করুন। সরকার যদি হস্তক্ষেপ করতো তাহলে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করানো হতো। আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে কিন্তু অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট যদি কোনো থানায় না পাঠানো হয় তাহলে পুলিশ কিভাবে গ্রেপ্তার করবে? আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আদালত যখন ষোড়শ সংশোধনীর রায় দেন তখন আদালত স্বাধীন। আদালত যখন খালেদাকে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে বের করে দিলেন তখনও বলেছে, আদালতে হস্তক্ষেপ করছে সরকার। এখন সেই বাড়িতে সেনাবাহিনীর ৫০২ জন কর্মকর্তা বাস করছেন। এটা কি সরকারের দোষ। বিএনপি রাজপথ উত্তপ্ত করার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ কি করবে এমন প্রশ্নের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই দলটির কোনো আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই। তারপরও যদি তারা কোনো অপচেষ্টা করে তবে তাদের প্রতিহত করা হবে। গত আট বছরে তাদের ৮ মিনিটও রাজপথে পাওয়া যায় নাই। বিশ্বের ১৭৩টি দেশের নেতাদের মধ্যে সততা প্রদর্শন এবং কর্মঠ হওয়ার তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় হওয়ায় তাকে দলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান ওবায়দুল কাদের। বৃটিশ পার্লামেন্টে টিউলিপ সিদ্দিকি টানা তৃতীয়বার এমপি নির্বাচিত হওয়ায় দলের পক্ষ থেকে তাকেও অভিনন্দন জানানো হয়। সদ্যপ্রয়াত ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘তিনি (আনিসুল) ছিলেন একজন স্বপ্নবাজ, আধুনিক এবং সংস্কৃতিমনা মানুষ। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দিপু মনি, আব্দুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, দেলোয়ার হোসেন, ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, সুজিত রায় নন্দী, হারুনুর রশিদ, শ ম রেজাউল করিম, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আমিরুল আলম মিলন, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাদেক খান, শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031