২০৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ নগর রংপুর সিটি করপোরেশন। পূর্বের পৌরসভা এলাকাসহ আশপাশের ইউনিয়নগুলো সংযুক্ত হয়েছে সিটি করপোরেশনে। হয়েছে ৩৩টি ওয়ার্ড। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, ভঙ্গুর ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত নগরীর ১৫টি ওয়ার্ড নগরের কিছু সুবিধা পেলেও বাকি ১৮টি ওয়ার্ড রয়েছে নগর সুবিধার বাইরে। ২১শে ডিসেম্বর নির্বাচনে ইউনিয়ন থেকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষ এবার ভোট দিবেন হিসাব-নিকাশ করে। প্রার্থী আর তাদের সমর্থকদের বোলচালে বিশ্বাস না করে যারা সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাস্তাঘাট ড্রেন কালভার্ট উন্নয়ন করবেন মূল্যবান ভোটটি তাদের বাক্সেই যাবে।
এদিকে, ভিজিএফ সুবিধা না পাওয়া ১৮ হাজার ভোটার তাদের হিসাব নিকাশ শুরু করে দিয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন ২০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মধ্যে সদরের ১০টি, কাউনিয়ার সারাই ও পীরগাছার কল্যাণীসহ ১২টি ইউনিয়ন মিলে ১১২টি মৌজাকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ এবং ৫টি আংশিক রয়েছে। সিটি হওয়ায় আগে ৭টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার পরিবার ভিজিএফ কার্ডসহ নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক জানান, সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী সিটি এলাকার মধ্যে বসবাসকারি গরিব ও দুঃস্থ মানুষ ভিজিএফসহ অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন না। তাই তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
গতকাল সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তামপাট ইউনিয়ন থেকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া হাওয়াইকাট্টারি গ্রামটি বর্তমানে সিটি এলাকার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড। ওই গ্রামের মজিবর মিয়া, জব্বার মিয়া জানান, সিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের কি উন্নয়ন হয়েছে। তারা বলেন, আগে কাঁচা রাস্তা দিয়ে হাঁটতাম এখনও তাই রয়ে গেছে। আগে পল্লীবিদ্যুৎ ব্যবহার করতাম এখনও তাই করছি। আগে এ গ্রামে কোনো ড্রেন ছিল না এখন তাই। পানি সরবরাহ এবং সড়ক বাতি না থাকলেও দিতে হচ্ছে বিল। এসব কারণে এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়র প্রার্থী যারা ভোট চাইতে আসবেন তাদের বলব হয় আমাদের সিটি এলাকা থেকে বাদ দেন, তা না হলে এসব সুবিধা না দেয়া পর্যন্ত বাড়িঘরের ট্যাক্স, সড়ক বাতি ও পানির বিল বন্ধ রাখুন। যেসব প্রার্থী আমাদের এসব মানবেন না তাদের আমরা ভোট দেব না। একই গ্রামের কামরুন নাহার (৫০) ও সুফিয়া খাতুন (৬৫) বলেন, আগে আমরা ভিজিএফ-এর চাল গম পেতাম। ঈদের আগে নানা ধরনের সাহায্য পেতাম। এখন এসবের কিছুই পাই না। তারা বলেন, মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরদের কাছে গিয়েও কোনো সাহায্য সহায়তা পাই নাই। তাহলে আমাদের সিটিতে থেকে লাভ কি?
২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাইদাহারা গ্রামের শফিকুল, মনসুর, বক্কর বলেন, আগেইতো ভালো ছিলাম ইউনিয়নে। করের জন্য বাড়তি টাকা দিতে হতো না। এখন রাতে সড়কে বাতি জ্বলে না কিন্তু আমাদের টাকা দিতে হচ্ছে ঠিকই। আমরা সুবিধা ভোগ না করে কেন টাকা দিব ? এবার সে কথাই বলব মেয়র প্রার্থীদের।
যুগিটারী গ্রামের মোকছেদ আলী, আনারুল, আজহারুল বলেন, সিটি এলাকায় আমরা এমন মেয়র করেছিলাম ৫ বছরে ৫দিনও তিনি আমাদের এলাকায় আসেননি। আমাদের সুখে দুঃখে তাকে আমরা কখনও পাশে পাইনি। মেয়রের অফিসে গেলে তার সঙ্গে কথা বলাই যেত না। তাই আমরা চিন্তা করেছি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে মেয়র প্রার্থী মিশতে পারবেন তাকেই ভোট দিব। ডিমলা পাকারমাথা এলাকার আব্দুর রহিম ও রেবেকা খাতুন লেখাপড়া করছেন কারমাইকেল কলেজে। তারা বলেন, চাকরির আবেদন করতে নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সার্টিফিকেট নিতে হয় সিটি এলাকা থেকে। পৌরসভায় থাকাকালে এসব আমরা ক্রয় করতাম ৫ টাকা করে। আর এখন ৪০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। আমরা ছাত্র মানুষ এতো টাকা কোথায় পাব ? তারা বলেন, এবার আমরা নতুন ভোটার হয়েছি। ভোট দিতে যাব কিন্তু তার আগে যে মেয়র প্রার্থী এসবের দাম কমাতে এবং সিটি উন্নয়ন করতে পারবেন তাকেই আমরা আমাদের মূল্যবান ভোটটি দেব।
ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফা বলেন, সিটি হওয়ার ৫ বছরেও আলুটারি পানবাড়ি এলাকার রাস্তাঘাট ও ড্রেন কালভার্টের কোন উন্নয়ন হয়নি। আমাদের কাঁচা রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হয়। বর্ষা হলে হাঁটু পানির উপর দিয়ে মালপত্র নিয়ে যেতে হয়। তারা বলেন, অনেকবার রাস্তাটি পাকা করার কথা বলা হলেও তা আজ পর্যন্ত হয়নি।
বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, বাতিল স্বতন্ত্র ৬ প্রার্থীর
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেছে আপিল বিভাগ। গতকাল শুনানি শেষে বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদ এ ঘোষণা দেন। এছাড়া ৬ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
গত ২৬ নভেম্বর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তার দুদিন পর নির্বাচন কমিশনের কাছে কাওসার জামান বাবলার বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপীর অভিযোগ দেয় ঢাকা সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা। পরবর্তীতে আপিল করা হলে আপিল বিভাগের বিচারক বিভাগীয় কমিশনার তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। এছাড়া ৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেন নির্বাচন কমিশনার ২৬ নভেম্বর। এরপর তারা আপিল করেন বিভাগীয় কমিশনার বরাবর। তাদের শুনানিও হয় বৃহস্পতিবার। শুনানি শেষে ৬ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করেন বিভাগীয় কমিশনার।
বিভাগীয় কমিশনার ও নির্বাচন অফিস সূত্রে আরো জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন মোট ৭ জন মেয়র প্রার্থী রইল। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিএনপির কাওসার জামান বাবলা, বাসদের আবদুল কুদ্দুস, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা, এনপিপির সেলিম আক্তার ও স্বতন্ত্র হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন ২০৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মধ্যে সদরের ১০টি, কাউনিয়ার সারাই ও পীরগাছার কল্যাণীসহ ১২টি ইউনিয়ন মিলে ১১২টি মৌজাকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ এবং ৫টি আংশিক রয়েছে। সিটি হওয়ায় আগে ৭টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার পরিবার ভিজিএফ কার্ডসহ নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক জানান, সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী সিটি এলাকার মধ্যে বসবাসকারি গরিব ও দুঃস্থ মানুষ ভিজিএফসহ অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন না। তাই তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
গতকাল সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, তামপাট ইউনিয়ন থেকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া হাওয়াইকাট্টারি গ্রামটি বর্তমানে সিটি এলাকার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড। ওই গ্রামের মজিবর মিয়া, জব্বার মিয়া জানান, সিটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের কি উন্নয়ন হয়েছে। তারা বলেন, আগে কাঁচা রাস্তা দিয়ে হাঁটতাম এখনও তাই রয়ে গেছে। আগে পল্লীবিদ্যুৎ ব্যবহার করতাম এখনও তাই করছি। আগে এ গ্রামে কোনো ড্রেন ছিল না এখন তাই। পানি সরবরাহ এবং সড়ক বাতি না থাকলেও দিতে হচ্ছে বিল। এসব কারণে এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়র প্রার্থী যারা ভোট চাইতে আসবেন তাদের বলব হয় আমাদের সিটি এলাকা থেকে বাদ দেন, তা না হলে এসব সুবিধা না দেয়া পর্যন্ত বাড়িঘরের ট্যাক্স, সড়ক বাতি ও পানির বিল বন্ধ রাখুন। যেসব প্রার্থী আমাদের এসব মানবেন না তাদের আমরা ভোট দেব না। একই গ্রামের কামরুন নাহার (৫০) ও সুফিয়া খাতুন (৬৫) বলেন, আগে আমরা ভিজিএফ-এর চাল গম পেতাম। ঈদের আগে নানা ধরনের সাহায্য পেতাম। এখন এসবের কিছুই পাই না। তারা বলেন, মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরদের কাছে গিয়েও কোনো সাহায্য সহায়তা পাই নাই। তাহলে আমাদের সিটিতে থেকে লাভ কি?
২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাইদাহারা গ্রামের শফিকুল, মনসুর, বক্কর বলেন, আগেইতো ভালো ছিলাম ইউনিয়নে। করের জন্য বাড়তি টাকা দিতে হতো না। এখন রাতে সড়কে বাতি জ্বলে না কিন্তু আমাদের টাকা দিতে হচ্ছে ঠিকই। আমরা সুবিধা ভোগ না করে কেন টাকা দিব ? এবার সে কথাই বলব মেয়র প্রার্থীদের।
যুগিটারী গ্রামের মোকছেদ আলী, আনারুল, আজহারুল বলেন, সিটি এলাকায় আমরা এমন মেয়র করেছিলাম ৫ বছরে ৫দিনও তিনি আমাদের এলাকায় আসেননি। আমাদের সুখে দুঃখে তাকে আমরা কখনও পাশে পাইনি। মেয়রের অফিসে গেলে তার সঙ্গে কথা বলাই যেত না। তাই আমরা চিন্তা করেছি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে মেয়র প্রার্থী মিশতে পারবেন তাকেই ভোট দিব। ডিমলা পাকারমাথা এলাকার আব্দুর রহিম ও রেবেকা খাতুন লেখাপড়া করছেন কারমাইকেল কলেজে। তারা বলেন, চাকরির আবেদন করতে নাগরিকত্ব ও চারিত্রিক সার্টিফিকেট নিতে হয় সিটি এলাকা থেকে। পৌরসভায় থাকাকালে এসব আমরা ক্রয় করতাম ৫ টাকা করে। আর এখন ৪০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। আমরা ছাত্র মানুষ এতো টাকা কোথায় পাব ? তারা বলেন, এবার আমরা নতুন ভোটার হয়েছি। ভোট দিতে যাব কিন্তু তার আগে যে মেয়র প্রার্থী এসবের দাম কমাতে এবং সিটি উন্নয়ন করতে পারবেন তাকেই আমরা আমাদের মূল্যবান ভোটটি দেব।
ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফা বলেন, সিটি হওয়ার ৫ বছরেও আলুটারি পানবাড়ি এলাকার রাস্তাঘাট ও ড্রেন কালভার্টের কোন উন্নয়ন হয়নি। আমাদের কাঁচা রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হয়। বর্ষা হলে হাঁটু পানির উপর দিয়ে মালপত্র নিয়ে যেতে হয়। তারা বলেন, অনেকবার রাস্তাটি পাকা করার কথা বলা হলেও তা আজ পর্যন্ত হয়নি।
বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, বাতিল স্বতন্ত্র ৬ প্রার্থীর
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেছে আপিল বিভাগ। গতকাল শুনানি শেষে বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদ এ ঘোষণা দেন। এছাড়া ৬ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
গত ২৬ নভেম্বর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তার দুদিন পর নির্বাচন কমিশনের কাছে কাওসার জামান বাবলার বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপীর অভিযোগ দেয় ঢাকা সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা। পরবর্তীতে আপিল করা হলে আপিল বিভাগের বিচারক বিভাগীয় কমিশনার তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। এছাড়া ৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেন নির্বাচন কমিশনার ২৬ নভেম্বর। এরপর তারা আপিল করেন বিভাগীয় কমিশনার বরাবর। তাদের শুনানিও হয় বৃহস্পতিবার। শুনানি শেষে ৬ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করেন বিভাগীয় কমিশনার।
বিভাগীয় কমিশনার ও নির্বাচন অফিস সূত্রে আরো জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন মোট ৭ জন মেয়র প্রার্থী রইল। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিএনপির কাওসার জামান বাবলা, বাসদের আবদুল কুদ্দুস, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা, এনপিপির সেলিম আক্তার ও স্বতন্ত্র হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ।