কম্পিউটার পণ্য আমদানিতে একদিকে যেমন আমদানি শুল্ক দিতে হবে না তেমনি ভোক্তা পর্যায়ে দিতে হবে না মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ীরা, রাজস্ব বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে দামের ওপর কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানালেন তারা। তবে নতুন এই আইন কার্যকরে রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যেই ধোঁয়াশা রয়েছে উল্লেখ করে, এনবিআরকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।
প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারে উৎসাহ দেয়া হলেও চলতি অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণার পর হঠাৎ করেই কম্পিউটার যন্ত্রাংশ বিক্রির ওপর ৪ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। রাজস্ব আয় বাড়াতে এনবিআরের এমন সিদ্ধান্তকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের সাথে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানায় সংশ্লিষ্টরা।
এরই প্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি কম্পিউটারের বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর থেকে ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর। তবে বাজারে এর কোন প্রভাব পড়েনি, ভোক্তার এমন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেন স্বয়ং বিক্রেতারা।
ভোক্তা পর্যায়ে এখনও কোন প্রভাব না পড়লেও প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহার বাড়াবে এই সিদ্ধান্ত। এমনটা উল্লেখ করে তথ্য-প্রযুক্তি খাতের প্রসারে উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘দুঃখজনক হল, পণ্য তৈরির পর পণ্যের গায়ে আমাদের লিখে দিতে হয় মেইড ইন চায়না। কারণ এটা লিখলে ট্যাক্স-ভ্যাট কম থাকে। এখন আমদানিতে শূন্য শতাংশ ভ্যাট এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। মেইড ইন বাংলাদেশ এই কথাটি লেখার জন্য উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে, রাজস্ব বোর্ডের নতুন এই আইন বাস্তবায়নে বাধা স্বয়ং রাজস্ব কর্মকর্তারা, এমন দাবি সংশ্লিষ্টদের।
প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘যখন আমরা কাস্টমস হাউজগুলোতে যাচ্ছি ওনারা বলছেন আমরা ভ্যাট প্রত্যাহার করি নাই। এই যে দ্বিধা-দন্দ তৈরি করা হয়েছে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতো প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারে না। ভ্যাটের বিষয়গুলো তাদেরকে স্পষ্ট করে বলতে হবে।’
পাশাপাশি মেধা সম্পদকে গুরুত্ব দেয়া হলে কম খরচে প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা সম্ভব বলে মনে করেন এই প্রযুক্তিবিদ।