বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভোক্তা অধিদপ্তরে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে ৬০০টির বেশি অভিযোগ এসেছে বলে জানিয়েছেন।
সোমবার রাজধানীর টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ১৬তম সভায় এ তথ্য জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিপ্তরে বিভিন্ন সময় রবি, গ্রামীণ, এয়ারটেল ও বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কলড্রপসহ নানা ধরনের ছয় শতাধিক অভিযোগ এসেছে। কোনো কোনো অভিযোগে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলোর কেউ কেউ হাইকোর্টে রিট করেছে।
ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল ফোন অপারেটর রবিকে পাঁচ-ছয়টি অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর তারা হাইকোর্টে রিট করে। চলতি সপ্তাহে সে বিষয়ে শুনানি হতে পারে। এ ছাড়া বাংলালিংকও একটি রিট করেছে। তাও তদন্তাধীন। তবে গ্রামীণ তাদের বিরুদ্ধে জরিমানার বিষয়ে কোনো রিট করেনি।
তৃণমূল পর্যায়ে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তাদের আরো সচেতন করতে থিম সং তৈরি করে তা শিগগিরই গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে ভোক্তাদের ঠকাতে না পারে সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর আগে ভোক্তা অধিকার সংগঠনের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, বিক্রেতা বা উৎপাদনকারীরা ওজনে কম দেয়, নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম নেয়। কিন্তু ভোক্তারা সচেতন হলে এ ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষা পাবেন। ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি সম্পর্কে আরো বেশি প্রচার করে ভোক্তাদের জানানোর দরকার বলে অভিমত দেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আাকরাম উদ্দিন বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি আরো শক্তিশালী করে এর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে ২০১০ সালে চালু হওয়া ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। শুরুর বছর মাত্র ৭৩টি অভিযোগ করেছিল ভোক্তারা। আর চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে অভিযোগ জমা পড়েছে ৩ হাজার ৮৯টি। যাচাই-বাছাই করে এসব অভিযোগের শতভাগই নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে দেশব্যাপী প্রায় ৭৫ হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তদারকি কার্যক্রম চালিয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৩৩ হাজার ২২৮টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা আদায়ের পরিমাণ প্রায় ২৩ কোটি ২২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আইন অনুযায়ী ২ হাজার ৪৭০ জন অভিযোগকারীকে ২৫ শতাংশ হিসেবে ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫২ টাকা প্রদান করা হয়। অবশিষ্ট ২২ কোটি ৮৮ লাখ ৫১ হাজার ৪৪৮ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসুসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।