আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। এ ব্যাপারে এখন থেকেই জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। এ লক্ষ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
শনিবার বিকালে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সদস্যসচিব ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ এই তথ্য জানিয়েছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কোনো পত্রিকা বা টেলিভিশনে কোনো কিছু প্রকাশ করা ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই পরিবর্তনটি ঘটেছে। দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে বিধায় এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। আমরা সেই মাধ্যমকে আগামী নির্বাচনে কাজে লাগাতে চাই। সে লক্ষ্য আমরা একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছি। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করবে।’
জানা গেছে, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রচার-প্রচারণার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, বিভিন্ন সেক্টরে বর্তমান সরকারের সাফল্য, আগামী দিনে দেশের জন্য আওয়ামী লীগের নেয়া বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রচার করবে। এছাড়াও এই কমিটি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরবে। পাশাপাশি কর্মসূচি ডেকে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার চিত্রও তুলে ধরা হবে।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে দলটির নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসবে এটা তো খুবই সুখবর। আমরা বিএনপির বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। বিএনপির গত নির্বাচনে না আসা ভুল ছিল, এই বক্তব্যের মাধ্যমে সেটি স্বীকার করে নিয়েছেন তারা। আগামী নির্বাচন আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে হোক। যেখানে বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, সেটি আমরা বলে আসছিলাম।’
হাছান বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ বলেছেন নির্বাচনের আগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিভিন্ন জেলা সফর করবেন এবং সেখানে গণজোয়ার সৃষ্টি হবে। আমরা দেখেছি তিনি বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার নামে হামলার (কক্সবাজার যাওয়ার সময় ফেনীতে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা) সাজানো নাটক করলেন। অতীতেও রাজনীতির নামে তারা বিভিন্ন সহিংস কর্মসূচি পালন করেছে, অতীতের মতো আবারও যদি তাঁরা সহিংসতা করে তাহলে দেশের মানুষ এর জবাব দেবে।’
বেগম খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করছে সরকার বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলাগুলো কোনোটাই বর্তমান সরকার দেয়নি, মামলাগুলো তিনি যাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন তাদের আমলেই হয়েছে।’
খালেদা জিয়া আদালতে হেনস্তা হয়েছেন এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া বলেছেন মামলা মোকাদ্দমার মাধ্যমে আদালতের মাধ্যমে তিনি হেনস্তা হচ্ছেন। বেগম খালেদা জিয়া প্রকৃতপক্ষে আদালতকেই হেনস্তা করছেন। তিনি আদালতে তার মামলায় ১৪৪ বার সময় নিয়েছেন। বাংলাদেশে আর কোনো মামলায় ১৪৪ বার সময় দেয়া হয়েছে কি না আমার জানা নেই। এই কারণেই আদালত হেনস্তার শিকার হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য সম্পর্কে আগামী ৭ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সেমিনার করবে আওয়ামী লীগ। ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম দলিল’ শীর্ষক সেমিনারে দেশের খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবীরা অংশ নেবেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আক্তার হোসেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটুসহ উপ-কমিটির সদস্যরা।