শিকাগোতে ওবামা ফাউন্ডেশনের প্রথম বৈশ্বিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে এ ঘটনা ঘটে। বাকপটু এবং হাস্যরসের জন্য খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে কৌতুক করেছেন।এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রিকান-বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট ওবামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে নয়- এমন একটি গুজব রটিয়ে তাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরির অপপ্রয়াস চালিয়েছে অনেকেই। এই দলে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও। তিনি একাধিকবার দাবি করেছেন, ওবামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে নয়, কেনিয়ায়।
ওবামা বক্তৃতাকালে ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে টার্গেট করে পরোক্ষভাবে একটুখানি বিদ্রুপ করেন। ওবামা ফাউন্ডেশনের সম্মলনে তিনি বলেন, আমি শিকাগোর এই অনুষ্ঠানে আপনাদের মাঝে আসতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ আশির দশকে শিকাগো থেকেই আমি রাজনৈতিক জীবন শুরু করি। তারপর তিনি সবাইকে চমকে দিয়ে বলেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্র আমার জন্মস্থান নয়, আমি জন্মেছি কেনিয়ায়! এ কথা শুনে চমকে যান উপস্থিত শ্রোতারা। তবে কালক্ষেপণ না করেই মুখে স্মিত হাসি ছড়িয়ে দিয়ে ওবামা বলেন, ঘাবড়াবেন না। এটি একটি কৌতুক ছিলো। উল্লেখ্য, ওবামার ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই ট্রাম্প এবং ওবামার মধ্যকার সম্পর্ক শীতল হতে শুরু করে। ওই সময় গুজব রটানো হয় যে, ওবামা আসলে কেনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছেন, অতএব তিনি জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন। তার জনপ্রিয়তায় ধস নামানোর উদ্দেশ্যে এই মিথ্যাচার করা হয়। এতে ট্রাম্প সরাসরি জড়িত ছিলেন। তিনিও ওবামাকে নিয়ে একই মন্তব্য করেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের পূর্ব পর্যন্ত তিনি নানা অনুষ্ঠানে এই মত পোষণ করে ওবামাকে হেয় করার চেষ্টা করেছেন। বক্তৃতার একদিন আগে ওবামা গণমাধ্যমে তার জন্ম সনদের প্রতিলিপি প্রকাশ করেন। ট্রাম্প সবসময়য়েই ওই জন্ম সনদের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি জানিয়ে এসেছেন। তাই বক্তৃতাকালে পরোক্ষভাবে ট্রাম্পকে একহাত নেন তিনি। হাস্যরত অবস্থায় বিদ্রƒপ করে বলেন, আমার এই জন্ম সনদ দেখে ট্রাম্পের চেয়ে গর্বিত আর কেউ বোধ করবেন না। যেহেতু অবশেষে এই জল্পনার অবসান হলো, আশা করি তিনি (ট্রাম্প) এখন রাষ্ট্রের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন। অবশ্য ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ওবামার কৌতুক করার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১১ সালে হোয়াইট হাউজের এক নৈশভোজে তিনি ট্রাম্পকে বিদ্রুপ করেন। ওবামা ফাউন্ডেশনের সম্মেলনে আরেকটি অভূতপূর্ব কাজ করেছেন তিনি। বারাক ওবামা এবং তার স্ত্রী মিশেল ওবামা ওই সম্মলনে তাদের সঙ্গে সেলফি তোলা নিষিদ্ধ করেছেন। এর পেছনের কারণটা অবশ্য যৌক্তিক। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকে আমি লক্ষ্য করে দেখেছি, মানুষ এখন আমাকে পাশে পেলে চোখে চোখ রেখে হাত মেলানোর বদলে সেলফি তুলতে বেশি আগ্রহী। এটা খুবই যান্ত্রিক একটা অনুভূতি তৈরি করে। মানবিক সংযোগ বাড়াতেই তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।