উদীয়মান মডেল রেশম খান ২১ বছর বয়সী । বসবাস বৃটেনে। জুনে তার চাচাতো ভাই জামেল মুখতারের সঙ্গে পশ্চিম লন্ডনে বেড়াতে বের হলে তাদের ওপর এসিড হামলা চালানো হয়। এতে রেশমার মুখম-ল এবং শরীরের কিছু অংশ ঝলসে যায়। টমলিন নামের এক ব্যক্তিকে এ ঘটনায় আটক করে পুলিশ। বেকটন শহরে হাঁটার সময় রেশম ও তার চাচাতো ভাইয়ের উপর এসিড ছুড়ে মারে টমলিন।

 কি কারণে এই হামলা চালানো হয়েছে তা স্পষ্ট না হলেও, ধরে নেয়া হয় জাতিবিদ্বেষ, ধর্মবিদ্বেষ থেকে এটা করা হয়েছে। সাধারনত মুখম-লে এসিড হামলার মতো ভয়াবহতার শিকার নারীরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। তারা নিজেদের পুড়ে যাওয়া মুখ নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন। লোকসম্মুখে আসতে চান না। এখানেই ব্যাতিক্রম ম্যানচেস্টারের ব্যবসায় ব্যবস্থাপনার ছাত্রী রেশম। এসিডে ঝলসে যাওয়া রেশম খান আর দশজন এসিডদগ্ধ নারীর মতো নিজেকে গুটিয়ে নেন নি। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয়। মানুষ কে তার চিকিৎসা এবং সেরে ওঠার অগ্রগতি স¤পর্কে জানাতে থাকেন। সম্প্রতি নিজের জন্মদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সেলফি দেন তিনি। এতে তিনি লেখেন, নিজেকে লুকিয়ে রাখার দিন শেষ। এসিডে পুড়ে যাওয়ার ভয়াবহতার তোয়াক্কা না করে সাহসিকতার সঙ্গে গণমাধ্যমে নিজের ছবি দেবার ফলে প্রশংসায় ভাসছেন রেশম। তার সাহসিকতার প্রশংসায় গণমাধ্যম এখন পঞ্চমুখ। টুইটারে দেয়া তার এক ছবির নিচে একজন লিখেছেন, তুমি কতটা আকর্ষণীয় এবং সাহসী! তোমার ওপর ভয়াবহ হামলার পরেও যে সাহস তুমি দেখিয়েছো, তা বিরল। আরেকজন লিখেছেন, এভাবেই সব বাধা ভেঙ্গেচুরে এগিয়ে যাও। তুমি অসাধারণ! আমরা তোমাকে নিয়ে গর্বিত। এসিড আক্রমণের ভয়াবহতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিজের ব্লগে রেশম লেখেন, এই ঘটনার পর আমি আতঙ্কে মুষড়ে পড়ি। তবে আমি ভাগ্যবান বোধ করি যে, এতে আমার মুখাবয়বের কোন বিকৃতি ঘটেনি। তিনি আরও লিখেছেন, এসিড হামলার শিকার নারীদের মধ্যে আমিই সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান। কারণ, পরিবার পরিজন ছাড়াও- জনসাধারণ এবং গণমাধ্যমের যে অকাতর ভালবাসা আমি পেয়েছি, তাতে আমি অভিভূত। হীনমন্যতার অন্ধকার চাদর ছিড়ে বেরিয়ে আসা রেশমদের কল্যাণেই বদলে যাচ্ছে সময় এবং দিন দিন আরও আত্মবিশ্বাসী হতে শিখছেন নারীরা।
Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031