নেপাল চট্টগ্রাম, মংলার সঙ্গে এবার পায়রা বন্দর ব্যবহারের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব  দিয়েছে । আগে কেবল চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের আগ্রহ দেখালেও নতুন প্রস্তাবে কাঠমান্ডু প্রস্তাবিত পায়রাকেও যুক্ত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নেপালের প্রস্তাবের বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারকরা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছেন। দক্ষিণ এশীয় চতুর্দেশীয় কানেকটিভিটি নেটওয়ার্ক বিবিআইএন’র আওতায় দেশটি বন্দর ব্যবহারের সুযোগ নিতে পারে। এ নিয়ে কাঠমান্ডুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন। বাংলাবান্ধায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন রয়েছে।

 রোহানপুর-সিঙ্গাবাদ ও বিরল-রাধিকাপুর রেল নেটওয়ার্কও রয়েছে। বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের সীমান্ত শহর কাকড়ভিটার দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় বাংলাদেশের পণ্য নেপালের ট্রাকে করে সেখানে পাঠানো সম্ভব বলে মনে করেন ঢাকার কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্রমেই বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট বাণিজ্য ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার। যা গত অর্থবছরে চারগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ মিলিয়ন ডলারে। গত সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ-নেপাল পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে উভয়ের তরফে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রক্ষার তাগিদ দেয়া হয়। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন, কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ নিয়ে নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নেপালে বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সে সুযোগ গ্রহণ করছেন।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রাণ, আরএফএল, রহিম আফরোজসহ বিভিন্ন কোম্পানি সেখানে ব্যবসা করছে। হাতিল গত মার্চে তার শোরুম উদ্বোধন করেছে এবং তারা আশাব্যঞ্জক সাড়া পেয়েছে।’ বাংলাদেশ প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের পাট বা পাটজাত দ্রব্য নেপালে রপ্তানি করে। সেখানে ১১টি ওষুধ কোম্পানিও পণ্য রপ্তানি করছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে আমরা এখানে প্রতিবছর সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ার করছি, যা এখানে ভালো সাড়া ফেলেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি নিয়ে দুই দেশ আলোচনা করছে। আশা করা যায়, এটি শিগগিরই সই করা সম্ভব হবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের (বিবিআইএন) উদ্যোগে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এখানে আমরা বিনিয়োগ করতে পারি বা তারা উৎপাদন করার পর আমরা সরাসরি কিনে নিতে পারি বা যৌথ বিনিয়োগও হতে পারে।’ নেপালের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০২০ সাল নাগাদ এক হাজার ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। দেশটি বর্তমানে ৭৪টি প্রকল্পের সমীক্ষা জরিপ চালাচ্ছে। এছাড়া, ২৫ থেকে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১০টির মতো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। নেপালের কাছে বাংলাদেশ তাদের নদী বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছে, যাতে বন্যার পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব হয়। এ নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা সাতদিন আগেও যদি তাদের নদীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারি, তবে বন্যা মোকাবিলা করতে আমাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে।’
Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031