অস্থিরতা বাড়ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দূর্নীতি ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষকদের গ্রুপিং কোন্দলে । ফলে দিনে দিনে অশান্ত হয়ে উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ। এসব ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারন শিক্ষার্থীরা।
ত্রিশাল থানার ওসি জাকিউর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য টানা কয়েকদিন ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং এখনো পুলিশী নজরদারী বিদ্যমান রয়েছে। মূলত নানা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন থাকায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতি সুষ্ঠ রাখার স্বার্থেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের গত ১৩ আগষ্ট সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মোহিত উল আলমের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ভিসির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত হন ট্রেজারার প্রফেসর ড.শামছুর রহমান। এরপরই সাবেক ভিসি মোহিত উল আলমের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হলে তোলপাঁড় শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে।
এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ট্রেজারার প্রফেসর ড.শামছুর রহমানের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ উঠে। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দূর্নীতির তদন্ত দাবীতে আন্দোলন শুরু হলেই ঘটে বিপত্তি। কারন আন্দোলনকারীদের একটি বৃহৎ অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দূর্নীতির তদন্ত দাবী করলেও গুটি কয়েক শিক্ষককের নেতৃত্বে একটি পক্ষ শুধুমাত্র টেজারারের দূর্নীতির বিচার দাবী করে সাবেক ভিসির পক্ষে অবস্থান নেয়। ফলে পছন্দের ভিসি নিয়োগ ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে লবিং গ্রুপিংয়ে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে যে কোন সময় অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ। গত কয়েক দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিস্থিতি দৃশ্যমান।
একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি দ্বায়িত্বের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোষ্ট সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমীন ও আলফারুন্নাহার রুমা এবং পরিবহন প্রশাসক রেজোয়ান আহম্মেদ শুভ্র’কে রুটিন দ্বায়িত্ব থেকে সরিয়ে বিধি মেনেই নতুনদের আগামী দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর থেকেই নানা ইস্যুতে অস্থিরতা বাড়তে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বক্ষেত্রে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি ট্রেজারার প্রফেসর এএমএম শামছুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক। মূলত ভিসির দ্বায়িত্ব পালনকালে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মেনেই দ্বায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনটি পদে রদবদল আনা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থির করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে ভিসি পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্টার কৃষিবিদ ড.হুমায়ন কবীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা বাড়ছে, তা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু কয়েকটি পদে রদবদল আনার সাথে অস্থিরতার কোন সর্ম্পক আছে কিনা তা বলা কঠিন। তবে কাউকে দ্বায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়নি। মূলত বিধি মেনেই রুটিন দ্বায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে মাত্র