পুলিশ ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহীতে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ওই মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ।
গ্রেপ্তারকৃত মাদরাাসা অধ্যক্ষের নাম আব্দুল জব্বার মাহমুদ ওরফে জিহাদী (৫৫)। তিনি নগরীর বোয়ালিয়া থানার ছোটবনগ্রাম এলাকার জামিয়া রহমানিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ। আব্দুল জব্বার পরিবার নিয়ে ওই মাদরাসার ভিতরে বসবাস করেন। তিনি হেফাজতে ইসলামের রাজশাহী শাখার অর্থ সম্পাদক।

এছাড়াও কাওয়ামি মাদররাসা স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য।
ওসি জানান, মঙ্গলবার রাতে ওই মাদরাসার হেফজো বিভাগের ১৪ বছরের এক ছাত্র থানায় এসে তাকে বলাৎকারের অভিযোগ করে। তার বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দা উত্তরপাড়া গ্রামে। সে ওই মাদরাসার আবাসিক ছাত্র। তার অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই অভিযান চালিয়ে ওই মাদ্রাসা থেকে আব্দুজ জব্বারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আব্দুল জব্বার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। তবে তার শারীরিক কোনো সমস্যা না থাকায় বুধবার সকালে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। পরে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রের বাবা।
গত শুক্রবার দুপুরে মাদররাসা অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার তার নিজের চেম্বারের বাথ রুমে ওই ছাত্রকে বলাৎকার করা হয়েছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি আমান উল্লাহ।
বলাৎকারের শিকার ওই ছাত্র জানায়, সে মাদরাসার আবাসিক হোস্টেলে থাকতেন। গত শুক্রবার দুপুরে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ তার বাথরুমে কাপড় ধৌত করতে দেয়। এসময় ওই অধ্যক্ষ বাথরুমে গোসল করতে ঢুকেন। গোসল করার এক পর্যায়ে তাকে ধরে বলাৎকার করে। এসময় বিষয়টি কাউকে বললে মাদরাসা থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয় অধ্যক্ষ।
সূত্র জানায়, গত শুক্রবার এ ঘটনার পর ওই অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি চলে যায়। পরে একটু সুস্থ হলে তার বাবা গত মঙ্গলবার তাকে মাদরাসায় আসতে বলেন। কিন্তু তিনি ভয়ে মাদরাসায় আসতে চাচ্ছিলো না। এসময় বাবার নিকট তাকে বলাৎকারের বিষয়টি খুলে বলেন। এরপর ছেলেকে নিয়ে বাবা রাজশাহীতে চলে আসেন। এসে তিনি বিষয়টি ছাত্রের এক শিক্ষককে প্রথমে জানান। এরপর রাতে তারা থানায় গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদরাসার একজন শিক্ষক বলেন, অনেক ছাত্রের সঙ্গে মাদরাসার অধ্যক্ষ এ ধরণের আচরণ করেছেন। তারা লজ্জায় বিষয়টি প্রকাশ করেন নি।
সম্প্রতি বিষয়টি তার স্ত্রী জানান পর প্রতিবাদ করলে স্ত্রীকেও নির্যাতন করে জখম করে। পরে তারা অধ্যক্ষের স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেছিলেন বলেও জানান ওই শিক্ষক।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031