এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ স্কুলের ৫ম শ্রেণির এতিম ছাত্রীকে দিনের পড় দিন শ্রেণি কক্ষসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে।
দিনের পর দিন ধর্ষণের ঘটনায় স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার লম্পট শিক্ষকের ৫ দিনের ছুটি মঞ্জুরসহ বদলির বিষয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন বলেও জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউপির কাশিয়াবাড়ী ২নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সুমাইয়া ও তার অভিভাবকরা সাংবাদিকদের জানান পিতা-মাতা না থাকার সুবাদে অনাথ সুমাইয়া তার নানা বাড়ি কাশিয়াবাড়ী শ্রী মুখ পাড়া গ্রামের নুরুল মিস্ত্রির বাড়ি থেকে লেখা পড়া চালিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিউল আলম প্রধান শফি সুমাইয়া ৪র্থ শ্রেণিতে পড়া কালীনই বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সুমাইয়ার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এরই ধারাবাহিকতায় সুমাইয়া ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সুমাইয়ার অভিভাবক নুরুল মিস্ত্রি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও সভাপতির কাছে গেলে তারা কৌশলে সুমাইয়া ও তার পরিবারকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য গোপন রাখার পরামর্শ দেয়। পাশাপাশি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ডিএনসির মাধ্যমে সুমাইয়ার গর্ভজাত সন্তানকে নষ্ট করার পরামর্শ দেয়। এতে সুমাইয়া ও তার পরিবার অস্বীকৃতি জানালে লম্পট শিক্ষক শফি, প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন মামলা না করার জন্য তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। পরে ২১শে অক্টোবর সুমাইয়ার পরিবার বিষয়টি এলাকাবাসীকে অবগত করলে অবস্থার বেগতিক দেখে চতুর সহকারী শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন লম্পট শিক্ষক শফিকে ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ওই লম্পট শিক্ষক ছুটির আবেদন করলে সহকারী শিক্ষা অফিসার তার ৫ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেন। এখন শিক্ষক শফি পালাতক রয়েছে। তবে থানায় অভিযোগ থেকে বিরত থাকার জন্য সুমাইয়া ও তার পরিবারকে হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক শফি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেনের নিকট ৫ দিনের ছুটি চেয়ে আবেদন করলে তিনি ৫ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছেন।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন জানান, আমি ঘটনাটি অবগত না হয়ে সহকারী শিক্ষক শফিউল আলম শফির ৫ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল্যা হিস সাফি জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। স্কুল ছাত্রী সুমাইয়াকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষাসহ আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য পলাশবাড়ী থানা পুলিশকে অনুরোধ করেছি। পলাশবাড়ী থানার ওসি মাহামুদুল আলম বলেন, অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে। পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ তোফাজ্জল হোসেন জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি। আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও থানার ওসিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।