আজ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে তথ্য কমিশন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর কার্যকর বাস্তবায়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও অংশীজনের সামর্থ বৃদ্ধির লক্ষ্যে । আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর ব্যবহারে তরুণদের সম্পৃক্তকরণ কার্যক্রমে সহযোগিতা, গণমাধ্যম যোগাযোগ ও প্রচারণা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উদ্যাপন বিষয়ে তথ্য কমিশন ও টিআইবি একযোগে কাজ করবে।
সমঝোতা অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে যথাযথ মান অনুসরণ বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তথ্য কমিশন ও টিআইবি যৌথভাবে দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি আইন অনুযায়ী সঠিক প্রক্রিয়ায় তথ্য প্রাপ্তির আবেদনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুণদের নিয়ে যৌথভাবে প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড, ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর ও টিআইবি’র ইয়ুথ এনগেইজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট (ইয়েস) সহ তরুণদের নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে তথ্য কমিশন ও টিআইবি যৌথভাবে তথ্য অধিকার বিষয়ক রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। এছাড়া তরুণদের উপযোগী তথ্য অধিকার বিষয়ক অ্যানিমেশন ভিডিও তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করবে এবং কমিউনিটি রেডিও’র মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য অধিকার বিষয়ক বার্তা/বিজ্ঞাপন/অনুষ্ঠান প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সমঝোতা স্মারকের আওতায় তথ্য কমিশন ও টিআইবি যৌথভাবে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে তথ্য অধিকার বিষয়ক জনসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা, সেমিনার, আলোচনা সভা ও তথ্য মেলার আয়োজন করবে। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে জেলা/উপজেলা প্রশাসন ও টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় দেশের ৪৫টি অঞ্চলে গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সাথে সমন্বয় করে র্যালি, আলোচনা সভা ও তথ্য মেলার আয়োজন করবে।
উল্লেখ্য, এই সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ স্বাক্ষরিত হওয়ার দিন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং উভয়পক্ষের সম্মতিসাপেক্ষে পরবর্তীতে এই মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।
প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. মোঃ গোলাম রহমান বলেন, “তথ্য অধিকার আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি হ্রাস ও জনগণকে ক্ষমতায়িত করে সুশাসন ও গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে টিআইবি’র সাথে আমাদের অংশীদারত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।”
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর বাস্তবায়নকে টিআইবি’র কার্যক্রমে সর্বোচ্চ প্রাধান্যের তালিকায় অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে উন্মুক্ততার সংস্কৃতিতে উত্তরণ সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি হ্রাসের জন্য অপরিহার্য। তাই তথ্য কমিশনের সাথে এ ধরণের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা ও একযোগে কাজ করার সুযোগ টিআইবি’র জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” তিনি এজন্য প্রধান তথ্য কমিশনার ও কমিশনের অন্যান্য সংশ্লিষ্টজনকে কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে তথ্য কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার, পরিচালক (প্রশাসন) ভূঁইয়া মোঃ আতাউর রহমান এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।