তিনটি বেসরকারি সংস্থাকে (এনজিও) ত্রাণকাজে নিষিদ্ধ করা হয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের নামে ভিন্ন কিছু করা হচ্ছে অভিযোগ এনে । সংস্থা তিনটি হলো মুসলিম এইড, ইসলামিক রিলিফ ও আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন।
বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।
কমিটির সদস্য মাহজাবিন খালেদ বলেন, তিনটি এনজিওকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে নিষেধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছু বেসরকারি সংস্থা ত্রাণ বিতরণের নামে অন্য কিছু করছে বলে তারা শুনতে পেয়েছেন। ত্রাণ বিতরণের নামে অন্য কিছু প্রচার করা বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। আর যারাই ত্রাণ দিতে আসবে, তাদের যাচাই-বাছাই করা এবং সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের কথা বলা হয়েছে।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে যেসব রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বসবাস করছে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যারা নতুনভাবে প্রবেশ করেছে তাদেরকেও ফিরিয়ে নেওয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করার যে অপচেষ্টা মিয়ানমার সরকার চালাচ্ছে তার প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
রোহিঙ্গারা যে এ দেশে অস্থায়ী ভিত্তিতে বসবাস করছে এ বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রচার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মিয়ানমার ও ভারতসহ সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব উত্থাপন এবং নিরাপত্তা পরিষদে এ ইস্যুতে ১৫টি দেশের মধ্যে ১২ দেশের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিশেষ সম্মান প্রদর্শন বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
কমিটির সভাপতি দীপু মনির সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশ নেন কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুহাম্মদ ফারুক খান, গোলাম ফারুক খন্দকার এবং মাহজাবিন খালেদ।