পুলিশ সিলেট থেকে টেকনাফ অভিমুখী আড়াইশ’ গাড়ির রোডমার্চ আটকে দিয়েছে। তবে, ত্রাণবাহী ৩০টি
গাড়িকে তারা কক্সবাজার পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অনুমতি না থাকায় তারা সিলেট থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চের বহরকে রশিদপুর এলাকা থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে রোডমার্চের আয়োজকরা জানিয়েছেন, তারা প্রশাসনিক সব অনুমতি নিয়েই রোডমার্চ শুরু করেছিলেন। পুলিশি বাধা পাওয়ার পর তারা সেখান থেকে সিলেটে ফিরে এসেছেন। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রতিবাদে ‘হিউমিনিটি ফর রোহিঙ্গা’ নামের নতুন গঠিত সিলেটের সংগঠন গতকাল দুপুরে আড়াইশ’ গাড়ি নিয়ে সিলেট থেকে রোডমার্চ শুরু করেছিল। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তারা প্রায় ২০ দিন আগে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে এই রোডমার্চের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর তারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুমতিপত্রও সংগ্রহ করেন। শুধু সিলেটের প্রশাসনই নয়, তারা রোডমার্চের যাওয়ার সব এলাকার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনুমতি নেন। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনেরও অনুমতি ছিল। একই সঙ্গে রোডমার্চকে ঘিরে সিলেটে প্রায় প্রতিদিনই সভা-সমাবেশের আয়োজন করা হয়। গতকাল সকাল ১০টায় তারা জমায়েত হন সিলেট নগরীর প্রবেশমুখ হুমায়ূন রশীদ চত্বরে। প্রায় আড়াইশ’ যানবাহন নিয়ে তারা দুপুর ১২টায় হুমায়ূন রশীদ চত্বর থেকে যাত্রা শুরু করেন। রোডমার্চের বহর লালাবাজার পেরিয়ে রশিদপুর পৌঁছলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। রোডমার্চকে আটকে দিতে আগে থেকেই রশিদপুরে দক্ষিণ সুরমা ও বিশ্বনাথ থানা পুলিশের একটি যৌথদল অবস্থান করে। তারা রাস্তার উপরই দাঁড়িয়ে থাকে। এবং বহরটি সেখানে যাওয়া মাত্র দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল হাত দিয়ে বহরটি থামিয়ে দেন। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে আসেন রোহিঙ্গা ফর হিউমিনিটির চেয়ারম্যান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহীনুর পাশা চৌধুরীসহ সিনিয়র নেতারা। তারা পুলিশের সঙ্গে অনুমতি নিয়ে কথা বললেও তাদের বহরটিকে আর সামনে এগুতে দেয়নি পুলিশ। এ সময় রশিদপুর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী হাজারো যানবাহন আটকা পড়ে। এদিকে, পুলিশি বাধার মুখে পড়ে রোডমার্চের বহরটি রশিদপুর এলাকায় এক পথসভায় মিলিত হয়। এ সময় পুলিশের তরফ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়, ত্রাণবাহী কোনো গাড়ি থাকলে সেটি ছেড়ে দেয়া হবে। পরে আয়োজকরা ৩০টি ত্রাণবাহী গাড়ি দেখিয়ে দিলে পুলিশ সেগুলোকে কক্সবাজার পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি দেয়। হিউমিনিটি ফর রোহিঙ্গা সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীনুর পাশা চৌধুরী মানবজমিনকে জানিয়েছেন, তারা সব অনুমতি নিয়েই আড়াইশ’ গাড়িযোগে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন। কিন্তু রশিদপুর পুলিশ তাদের আটকে দিয়েছে। তাদের অনুমতি রয়েছে বলে পুলিশকে বুঝালেও স্থানীয় পুলিশ তাদের কোনো কথা শুনেনি। তিনি বলেন, রোডমার্চের বহরটি আটকে দেয়ায় তারা পথিমধ্যের সব অনুষ্ঠান স্থগিত করেছেন। এছাড়া টেকনাফের সমাবেশও তারা স্থগিত করেন। তিনি বলেন, রোডমার্চের বহর আটকে দিলেও পুলিশ ত্রাণবাহী গাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খায়রুল ফজল গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন, রোডমার্চের অনুমতি না থাকায় তারা আড়াইশ’ গাড়ির বহর আটকে দিয়েছেন। তারা অনুমতিপত্র দেখাতে না পারায় তাদের আটকে দেয়া হয় বলে জানান তিনি। তবে, ত্রাণবাহী ৩০টি যানবাহনকে তারা কক্সবাজার যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, রোডমার্চের বহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছে দুপুরের খাবার পর্ব শেষ করার কথা ছিল। এছাড়া যাওয়ার পথে শায়েস্তাগঞ্জে সংক্ষিপ্ত পথসভা, ফেনীর লালপুল সুলতানিয়া মাদরাসায় রাতযাপন শুক্রবার সকালে টেকনাফের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার পৌঁছা এবং সমাবেশ করার প্রস্তুতি ছিল। বহরটি আটকে দেয়ায় তারা সব আয়োজন বাতিল করেছেন বলে জানান। রোডমার্চের বহরটি সিলেট ত্যাগের প্রাক্কালে হুমায়ূন রশীদ চত্বরে পথসভায় সভাপতিত্ব করেন রোডমার্চের প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা মহিউল ইসলাম বুরহান। বক্তব্য রাখেন, হিউমিনিটি ফর রোহিঙ্গা সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি শাহীনুর পাশা চৌধুরী, সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ এম আতাউর রহমান পীর, মৌলভীবাজারের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ওয়েস আহমদ, অধ্যক্ষ আবদুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা মশাহিদ আহমদ দয়ামীরি, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, ইউকে জমিয়ত নেতা শাহ হিফজুল করিম, মাওলানা আবদুল মালিক চৌধুরী, ইউকে জমিয়ত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ, শরীফ খালেদ সাইফুল্লাহ, রুহুল আমীন নগরী, মাওলানা কবির আহমদ প্রমুখ।
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | ||||||
2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
30 | 31 |