জনবল সংকট চরম আকার ধারণ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে (ডিএনসি) । ঘন ঘন মহাপরিচালক পরিবর্তনের পাশাপাশি কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায় পর্যন্ত রয়েছে চরম জনবলস্বল্পতা। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্থার কর্মকা- ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
লোকবল সংকটের কারণে কাজে অসুবিধা হওয়ার কথা স্বীকার করে ডিএনসির নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দীন আশা প্রকাশ করেন, এই সংকট দ্রুতই কেটে যাবে।
১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, নানা অব্যবস্থা আর অবহেলার শিকার গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্থাটি। মাস কয়েক আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজ মন্ত্রণালয়ধীন এ সংস্থাকে ঠুঁটো জগন্নাথ বলে আখ্যায়িত করেন।
সূত্রমতে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তার সাংগঠনিক কাঠামোর প্রায় অর্ধেক জনবল নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এমনকি পরিচালকের চারটি পদের মধ্যে দুটিই শূন্য। তার ওপর কয়েক দিনের মধ্যে অতিরিক্ত মহাপরিচালকের পদও শূন্য হবে বর্তমান কর্মকর্তা অবসরে গেলে। পরিচালকের চারটি পদের মধ্যে বর্তমানে পরিচালক (প্রশাসন) ও পরিচালক (নিশি) পদ শূন্য।
এদিকে পরিচালক হিসেবে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে যুগ্ম সচিব মো. মাসুদ করিমকে এ সংস্থায় বদলি করা হলেও তাকে গ্রহণ করেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আবার বদলির আদেশ না মেনে পদ আঁকড়ে থাকার উদাহরণও আছে সংস্থাটিতে। ফলে জনবল সংকটে আক্রান্ত এ সংস্থা থেকে কর্মকর্তাদের চলে যেতে হয় অন্য সংস্থায়।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক পরিমল কুমার দে কিছুদিন আগে বদলি হন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু তিনি যাননি। ফলে এডিজি হিসেবে পদায়নকৃত পরিচালক আতাহার আলীকে চলে যেতে হয়েছে অন্য সংস্থায়। তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর মিল্কভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অর্গানোগ্রাম অনুসারে মোট জনশক্তি ১৭২৩। কিন্তু কর্মরত আছে প্রায় নয়শ জন। এর মধ্যে মাদক অপরাধ দমনে সরাসরি নিয়োজিত জনশক্তির সংখ্যা প্রায় ছয়শ। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধির জন্য একটি প্রস্তাবনা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আতিকুল হক জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি ১৯ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এ প্রতিবেদককে জানান, জেলা পর্যায়ে ন্যূনতম ৩০ জন জনবল থাকবে। তিনি আরো জানান, তিন শ্রেণিতে ভাগ করে জেলায় সর্বোচ্চ জনবল থাকবে ৫০ থেকে ৫৫জন; প্রস্তাব অনুসারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জনবল দাঁড়াবে প্রায় আট হাজার ।