আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে রোগী আছে ডাক্তার নেই, তার উপর ওষুধ কোম্পানির এমআরদের ভিড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আনোয়ারা মেডিকেলে আসা সেবা প্রার্থীরা। শুধু তাই নয়, মেডিকেলে দায়িত্বরত ডাক্তাররাও সময় মতো আসেন না।
জানা যায়, এসব বিভিন্ন অভিযোগের ভিক্তিতে সোমবার হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও গৌতম বাড়ৈ। তার আসার খবর আগেই হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়লে সকাল আটটায় মেডিকেলে উপস্থিত হন ডাক্তার ও অনান্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সোমবার সকাল দশটায় ইউএনও হাসপাতাল পরিদর্শন চলে গেলে আবারো এলোমেলো হয়ে যায় হাসপাতাল। সবাই এক সাথে বসে আড্ডা আর নাস্তা করে সময় কাটাতেও দেখা গেছে ডাক্তারদের। রোগীরা লাইনে দাড়িয়ে থাকলেও সেদিকে কোন নজর নেই তাদের।
রোগীদের অভিযোগের ভিক্তিতে মঙ্গলবার সকাল নয়টায় আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে গিয়ে দেখে যায়, আউটডোরে রোগীরা লেইন ধরে দাড়িয়ে আছে ডাক্তারের অপেক্ষায়। তখনও কোন রুমে ডাক্তার আসেনি।
কথা হয় আগত এক রোগীর সাথে, তিনি জানান সকাল সাড়ে আটটা থেকে আমি আমার মেয়ে নিয়ে আসছি ডাক্তারের কাছে এখনো ডাক্তার আসেনি। যাওয়া হয় ইর্মাজেন্সীতে, সেখানে গিয়ে দেখা যায় ডাক্তার রোগী দেখতেছে আর তাকে ঘিরে ধরেছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কর্মীরা, তাদের ভিড়ে রোগী দেখাার সুযোগটুকু পাচ্ছে না ইর্মাজেন্সিতে কর্মরত ডাক্তার নুরুন নাহার জান্নাত।
দশটায় আউটডোরে গিয়ে দেখা যায় আরো লম্বা হয়েছে রোগীদের ভিড়, ডা. পারিজাত বিশ্বাস নামক একজন আসলেও আর কোন ডাক্তারের দেখা নেই। সকাল সাড়ে দশটা হলেও শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া, ডা. নুরুন নাহার জান্নাত ও ডা. পারিজাত বিশ্বাস ছাড়া আর কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি।
সকাল সাড়ে দশটা পার হলেও মেডিকেলে আসেনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রিপন দত্ত, ডা. সৈয়দ মো. রিদুয়ানুল হক চৌধুরী, ডা. সুনন্দা শীল, ডা. আহসানুল আবেদিন, ডা. রবিউল আলম মো. এরফান উদ্দীন, ডা. জামাল উদ্দীন, মেডিকেল অফিসার শামসুন্নাহার আজম, সহকারী সার্জন ডা. ঈশিতা আইরিন, সহকারী ডেন্টার সার্জন ডা. তানজিলা ফারজানা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, সোমবার আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার গৌতম বাড়ৈ স্যার মেডিকেলে এসে পরিদর্শন করেছেন। তাই ডাক্তাররা সকাল আটটায় উপস্থিত হয়েছিলেন। তাই আজ ডাক্তাররা দেরি কওে আসতেছে। প্রতিদিন তারা সাড়ে দশটা এগারোটায় মেডিকেলে আসবে সাড়ে বারোটায় আবার চলে যায়। যার কারণে মেডিকেলে আসা রোগীরা ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছে না। দেখা করে ডাক্তার না আসার কারণ জানতে চাইলে এগারোটার পর যোগাযোগ করতে বলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া। হাসপাতালের কর্মকর্তাদের উপস্থিতির হাজিরা খাতায় কয় উপস্থিত আছে দেখতে চাইলেও ‘বড় স্যার’ অনুমতি ছাড়া দেখানো যাবে না বলেও জানিয়েছে কর্মচারী।
এব্যপারে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাখাল চন্দ্র বড়ুয়া সিটিজি টাইমস ডটকমে বলেন, এখন আমি গাড়িতে আছি, আপনি সময় করে অফিসে আসুন, বসে কথা বলব।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, যারা উপস্থিত হয়নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিবো টিএসওকে। বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৩তারিখ মিটিংয়ে বিষয়টি দেখব ।