পুলিশ সারা দেশে রোহিঙ্গাদের বিচরণ ঠেকাতে কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলার ২৭ স্থানে নিরাপত্তাচৌকি বসিয়েছে । এ ছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় একই ধরনের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে।
আজ শনিবার চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মনির-উজ-জামান এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান। আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে নগরের খুলশী এলাকায় ডিআইজির কার্যালয়ে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
ডিআইজি মনির-উজ-জামান বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে রোহিঙ্গারা মিশে যাচ্ছে। এটা ঠেকাতে কক্সবাজারে ১৬, বান্দরবানে ৬, রাঙামাটিতে ৪ এবং খাগড়াছড়িতে একটি নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়েছে। এতে যেসব রোহিঙ্গা ধরা পড়বে তাদের কক্সবাজারের ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কুসুম দেওয়ান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে নিরাপত্তাচৌকি বসানোর কাজ শুরু হয়। কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলার ২৭ জায়গায় চৌকি বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ফেনী, কুমিল্লাসহ রেঞ্জের বিভিন্ন জায়গায়ও এমন চৌকি বসানো হবে। এতে কোনো রোহিঙ্গা ধরা পড়লে তাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে আমরা কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেব।
এদিকে রাখাইন থেকে আসা রোহিঙ্গাদের চট্টগ্রামে দেখা গেলে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানাতে অনুরোধ করেছে জেলা প্রশাসন। রোহিঙ্গাদের বিচরণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসন থেকে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রামে রোহিঙ্গাদের দেখা গেলে খাদ্য ও ওষুধসহ মানবিক সাহায্য দিয়ে তাদের কক্সবাজার ক্যাম্পে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ জনগণ আমাদের সহযোগিতা করলে কাজটি সহজ হবে।
ডিআইজি কার্যালয়ে সভা: আসন্ন দুর্গাপূজায় চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় সাড়ে তিন হাজার মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বলে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়। প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব সদস্যরা পাহারা ও টহল দেবেন বলে ডিআইজি জানিয়েছেন। এসব মণ্ডপে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের কঠোর হাতে দমন করতে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন ডিআইজি মনির-উজ-জামান।
সভায় চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ হাজার ৫৯৪টি মণ্ডপের মধ্যে ১ হাজার ২৮০টি সাধারণ, ১ হাজার ২৫৮টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১ হাজার ৫৬টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় মণ্ডপে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন ডিআইজি।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কুসুম দেওয়ান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার ছাড়াও ১১ জেলার পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা অংশ নেন।